
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’সহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রার ওপর অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
শনিবার (১০ মে) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং বিশেষত প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৯ ধারার ক্ষমতাবলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আজ ১০ মে থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন ‘যমুনা’ ও তার আশপাশের এলাকা—যেমন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড়, অফিসার্স ক্লাব মোড় এবং মিন্টো রোড এলাকাজুড়ে—কোনো ধরনের রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত, শোভাযাত্রা ও যেকোনো ধরনের জমায়েত সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।
ডিএমপির মতে, এসব এলাকায় কোনো ধরনের জনসমাগম বা সংগঠিত কার্যক্রম আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে এবং উচ্চপর্যায়ের সরকারি কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে, দেশের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত সচিবালয় এলাকায় জনসমাগম বেড়ে গেলে তা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা যেহেতু একটি কৌশলগত ও নিরাপত্তাবিষয়ক গুরুত্বসম্পন্ন এলাকা, সেখানে যে কোনো ধরণের জনসমাগম বা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিরাপত্তা হুমকির আশঙ্কা তৈরি করে।
ডিএমপি আরও জানিয়েছে, যারা এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সভা-সমাবেশ, মিছিল বা জমায়েত করার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখযোগ্য যে, এর আগেও দুই দফায় যমুনা এবং সচিবালয় এলাকা ঘিরে একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ডিএমপি। তবে এবার তা অনির্দিষ্টকালের জন্য বলবৎ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। ফলে, রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থানরত রাজনৈতিক, সামাজিক কিংবা নাগরিক সংগঠনগুলোকে এ নিষেধাজ্ঞা মাথায় রেখেই তাদের কার্যক্রম পরিকল্পনা করতে হবে।
এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার সময়কে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা-সমালোচনাও চলছে। বিশেষ করে, সাম্প্রতিক সময়ের রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচির পরিকল্পনার মধ্যেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হলো, যা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে প্রশাসনিক কৌশলের অংশ হতে পারে।
ডিএমপির এই সিদ্ধান্ত কবে পর্যন্ত বলবৎ থাকবে, সেটি নির্ভর করবে পরিস্থিতি বিবেচনায় পুলিশের পক্ষ থেকে পরবর্তী নির্দেশনার ওপর। আপাতত, ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত’ নিষেধাজ্ঞাটি বলবৎ থাকবে বলে গণবিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ