
সংগৃহীত ছবি
ঢাকা: কাঁচাবাজারে লাগামহীনভাবে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। এটা যেন দেখার কেউ নেই। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিচ্ছে কাঁচাপণ্যের দাম। দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতার দৌড়ে এবার যোগ হলো মশলাও।
রমজানে যে পেঁপের কেজি ছিল ৪০ টাকা, বতর্মানে তা ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। দাম বেড়েছে করলা, লাউ, ধুন্দুল, বরবটিসহ আরও অনেক সবজির। বেড়েছে চিনি ও পেঁয়াজের দামও।
কয়েকদিন আগে ১২০ টাকায় বিক্রি হওয়া খোলা চিনি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। আর হঠাৎ করেই পেঁয়াজ কেজিতে ১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়।
শুক্রবার (৫ মে) রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেট বাজার, মেরাদিয়া হাট, মালিবাগ বাজার, গোড়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার এবং সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) খুচরা বাজারদরের তালিকা পর্যালোচনা করে দাম বাড়ার এমন চিত্র দেখা গেছে।
এ সপ্তাহে সবজির বাজারে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় আছে, পেপে, লাউ, করলা, উস্তা, লতি, বরবটি, ধুন্দুল, সজনের এবং কাঁকরোল। আর অন্যান্য সব সবজির দাম আগের মতোই আছে।
প্রতি কেজি সজনে বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকায়। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। ১ কেজি পেপে বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা, যা দুই সপ্তাহ আগেও ছিল ৩৫-৪০ টাকা। প্রতি কেজি লতি, করলা, উস্তা, চিচিঙ্গা, বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতিকেজি কাচা মরিচ ১০০-১২০ টাকা।
কম দামি সবজির মধ্যে, প্রতি কেজি পাকা টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। মিষ্টিকুমড়া প্রতি পিস কাঁচা ৪০ এবং পাকাটা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় আলু প্রতি কেজি ৩৫-৪০ টাকায়। লেবু হালি ৩৫-৪০ টাকা। আর সব ধরনের শাকের আটি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।
খিলগাঁও বাজারের সবজি বিক্রেতা ফজলে রাব্বি বলেন, সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। আগের মত তেমন সবজি পাওয়া যায় না। পাইকারি পর্যায়ে বেশি দামে বিক্রি করে। তাই আমারা যারা খুচরা ব্যবসায়ী আছি আমাদেরও বাধ্য হয় বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। আর লাভ ছাড়া তো বেচে না কেউ। মানুষ সবজি কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। দাম বাড়ায় ক্রেতারা কম করে সবজি কিনেন। আর দাম বাড়লেও আমাদের আগের মত ব্যবসা হয় না।
ঈদুল আজহা আসতে এখনও অনেক দেরি। কিন্তু তার আগে মসলার দাম বেড়ে গেছে। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ৩৫- ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হত। আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ পেঁয়াজ কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা।
বর্তমানে দেশি নতুন রসুনের দাম কেজিপ্রতি ১৩০-১৮০ টাকা, যা এক মাস আগেও ছিল মাত্র ৮০ থেকে ১২০ টাকা। সে হিসেবে রসুন কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা।
সবচেয়ে বেশি বেড়েছে আদার দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২২০ টাকায় এবং চায়না বা আমদানি আদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
প্রতি কেজি জিরার বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকায়। শুকনা মরিচ ইন্ডিয়ান প্রতি কেজি ৪২০ টাকা এবং দেশি শুকনা মরির প্রতি কেজি ৩৭০ টাকা। হলুদ গুড়া কেজি ২৫০ টাকা, গুড়া মরিচ কেজি ৪৫০ টাকা, ধনিয়া প্রতি কেজি ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে চাল ও ডালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আঠাইশ চাল ৫৫ টাকা, মিনিকেট চাল ৭২, গুটি স্বর্ণা চাল ৫০, নাজির শাইল ৮০ টাকা, পাইজাম চাল ৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মশু ডাল দেশি প্রতিকেজি ১২৫-১৩৫ টাকা এবং আমদানি মশুর ডাল ৯৫ -১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এঙ্কর ডাল প্রতি কেজি ৬৫ টাকা। মুগ ডাল প্রতি কেজি ১৩০ টাকায়।
সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। প্রতিকেজি ব্রয়লার ২৪০ টাকা, লাল মুরগি প্রতিকেজি ৩৫০ টাকা, বড় সাইজের সোনালী এবং কক মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৬০ টাকায়। দেশি পাতি হাঁস প্রতিটি ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস প্রতিকেজি হাড়সহ ৭৩০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি খাসির মাংসের দাম এখন ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত। ছাগলের মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আধাকেজি ওজনের বেশি ইলিশের দাম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। এক কেজি বা তার ওপরের ওজনের ইলিশের দর ১৬০০ টাকা। এক কেজি ওজনের রুই মাছের দাম ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। কাতল মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। কাঁচকি মাছ ৪৫০-৫০০ টাকায়, ট্যাংরা ৬০০-৭০০ টাকা, আইড় মাছ ৭০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৬০০ থেকে ৭০০ টাক কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাশ মাছ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা। সিলভার কাপ ২০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে বাজার ভেদে ৪৫০ টাকা। কার্ফু মাছের কেজি ২৫০ থেকে বাজার ভেদে ৩০০ টাকা।