
ছবি: সংগৃহীত
২০১২ সালে বাংলাদেশি ছোটপর্দার অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান ও স্পেনপ্রবাসী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মডেল মারিয়া মিমের প্রেম ও পরিণয় নিয়ে বিনোদন জগতে ছিল বিস্তর আলোচনার ঝড়। সে সময় তাদের জুটি ছিলো অনেকের কাছে আদর্শ প্রেম ও বিবাহিত জীবনের প্রতীক। কিন্তু ২০১৯ সালের শেষ দিকে সেই সম্পর্কের ভাঙন ঘটে। বিচ্ছেদের পরে উভয়েই আলাদা জীবন শুরু করেন। তবে তাদের এই সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ—সন্তান আরশ হোসেন, থেকে যায় মাঝখানে। আর এখন, ছেলেকে ঘিরেই প্রকাশ্যে এলো নতুন অভিযোগ।
সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে মারিয়া মিম বলেন, তাদের ছেলে আরশ বর্তমানে পুরোটাই তার তত্ত্বাবধানে বড় হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, সন্তানকে নিয়ে অভিনেতা সিদ্দিক এক ধরনের ‘পলিটিকস’ করেন। মিমের অভিযোগ, “আমার ছেলে যখন তার বাবার কাছে যায়, সিদ্দিক প্রচুর ছবি তোলে। তারপর সে ছবি ফেসবুকে বিভিন্ন সময়ে আপলোড করে—যেন লোকজন ভাবে, আরশ সবসময় তার কাছেই থাকে। অথচ সত্যিটা ভিন্ন। বাস্তবে, ছয় মাসে মাত্র একবার ওর কাছে যায় আরশ, তাও হয়তো দুই বা তিন দিনের জন্য। বাকি সময়টুকু সে আমার কাছেই থাকে।”
মিম আরও বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে যাই, তখনো ছেলেকে সঙ্গে নিই। আমার সন্তানের সব খরচ আমিই বহন করি। ওর বাবা কিছুই করে না। এ নিয়ে আমি কোনো অভিযোগ করতে চাই না। কিন্তু আমি যখন বিদেশে যাই, তখন মানুষ ভাবে, সন্তানকে ফেলে ঘুরে বেড়াচ্ছি। সিদ্দিক যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় উপস্থাপন করেন, তাতে মানুষ বিভ্রান্ত হয়।”
সাক্ষাৎকারে মারিয়া মিম জানান, ডিভোর্সের পর আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, আরশ তার বাবার কাছে যেতে পারবে। তবে রাতে সেখানে থাকতে পারবে না—বিকেল ৫টার আগেই ফিরে আসতে হবে। মিম বলেন, “আমি কখনো আদালতের সে নির্দেশ অমান্য করিনি। বরং আমি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে ওকে দুদিন বাবার কাছে থাকতে দিয়েছি। কিন্তু সেখান থেকে ফিরে আরশ আমাকে বলে—‘মাম্মি, বাবা তো বলে তোমার কাছে না যেতে।’ এটা স্পষ্টভাবে ব্রেনওয়াশ। একজন বাবা যদি সন্তানের মনে তার মায়ের প্রতি বিদ্বেষ ঢুকিয়ে দেয়, সেটা খুব দুঃখজনক।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “সিদ্দিক কিংবা তার পরিবার চায় না, আরশ আমার কাছে থাকুক। তারা চায় না আমি ওকে কাছে রাখি। সেজন্য তারা এমন কথাবার্তা ও প্রভাব ছড়িয়ে দেয়, যাতে ও আমার প্রতি নেতিবাচক ধারণা পায়। আমি বুঝতে পারি, বাবা কিংবা পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলের ওপর একটা মানসিক চাপ তৈরি করা হয়।”
মিম বলেন, “আমি শুধু চাই আমার সন্তান একজন ভালো মানুষ হোক। বাবার ভালোবাসা সে পাক, তাতে আমি কখনো বাধা দেইনি। কিন্তু আমি চাই না, কেউ আমার সন্তানকে ব্যবহার করুক। আরশ এখন ছোট, সে সব কিছু বুঝে না। কিন্তু আমরা যদি এখনই সতর্ক না হই, তবে ভবিষ্যতে তার ব্যক্তিত্ব বিকাশে বাধা সৃষ্টি হতে পারে।”
বিচ্ছেদের পর সন্তানের দায়িত্বকে কেন্দ্র করে তারকা দম্পতির এই টানাপোড়েন অনেকের নজর কেড়েছে। অনেকে বলছেন, সন্তানকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা নয়, দরকার সম্মানজনক সমঝোতা ও সহানুভূতিশীল আচরণ—যেটি সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে জরুরি।
বাংলাবার্তা/এমএইচ