
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। শনিবার (৭ জুন) রাতে গুলশানের নিজের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় অনুষ্ঠিত এই সৌজন্য সাক্ষাৎ ও শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এই মিলনমেলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির নেতারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং নেতা হিসেবে তার সুস্থতা ও রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আলোচনা করেন। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ সময় গণমাধ্যমকে বলেন, “আজকের এই সাক্ষাৎ আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের একটি মুহূর্ত। আমরা সেই নেত্রীর সান্নিধ্যে আসতে পেরে গর্বিত, যিনি বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুণগত পরিবর্তনের প্রতীক। দীর্ঘদিন ধরে তার নেতৃত্বে দল রাজনৈতিক সফলতা অর্জন করেছে এবং তার চিন্তা-চেতনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন দিশা দেখিয়েছে।”
মির্জা ফখরুল আরও যোগ করেন, “খালেদা জিয়ার গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল বিশ্বাস ও গভীর অনুরাগ আমাদের দলের অন্যতম মূলমন্ত্র। তিনি সবসময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার গুরুত্ব আর এর প্রতি তার গভীর আস্থা প্রকাশ করে আসছেন। আমাদের দলও সেই মূল্যবোধকে অক্ষুণ্ণ রেখে কাজ করে যাচ্ছে। গণতন্ত্র ছাড়া কোনো রাষ্ট্রে সঠিকভাবে উন্নয়ন বা শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না, এই বিশ্বাস খালেদা জিয়ার বাণীতে স্পষ্ট। আমাদের নেত্রী এই বিশ্বাসকে নিজের রাজনৈতিক জীবনের মূল মন্ত্র হিসেবে নিয়েছেন।”
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের আপডেট দিতে গিয়ে মহাসচিব বলেন, “ম্যাডাম আগের তুলনায় অনেক ভালো আছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি ইনশাল্লাহ আগের থেকে আরও সুস্থ ও সক্রিয় হয়ে উঠছেন। দলের পক্ষ থেকে আমরা সবাই তার দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করছি।”
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে আটটার দিকে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বেশ কয়েকজন সদস্য ‘ফিরোজা’য় উপস্থিত হন। তাদের মধ্যে ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
এই শুভেচ্ছা বিনিময় সভার পরে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল হালিম ও আফরোজা খানম রিতাসহ আরও কয়েকজন বিএনপি নেতাও খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব এই সৌজন্য সাক্ষাত ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে দলের ঐক্য এবং রাজনৈতিক গতিশীলতা বজায় রাখার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছে। তারা উল্লেখ করেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন আরও শক্তিশালী করতে হবে।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে নেতৃবৃন্দের এই সাক্ষাৎ বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি ইতিবাচক বার্তা হিসেবে ধরা হচ্ছে, যেখানে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একত্রিত হয়ে রাজনৈতিক পথচলার নতুন দিক নির্ধারণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা প্রত্যাশা করি, সামনে রাজনীতির যে সমস্ত চ্যালেঞ্জ থাকবে, সেগুলো মোকাবিলায় আমাদের দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে এবং জনমতকে সামনে রেখে দেশের গণতান্ত্রিক অবস্থা পুনরুদ্ধার করবে।”
এই ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে বিএনপির নেতারা নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার পাশাপাশি জনগণের কাছে একটি ঐক্যের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেদা জিয়ার সঙ্গে নেতাদের এই ঘনিষ্ঠতা দলকে নতুন করে রাজনৈতিক জীবনে সজীব করে তুলতে পারে এবং দলকে আগামী দিনের রাজনীতিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম করবে।
অপরদিকে, দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় উপলক্ষে ‘ফিরোজা’য় অনুষ্ঠিত এই সভা কেবল শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং রাজনৈতিক কর্মসূচি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। এতে দলের শক্তি বৃদ্ধি এবং জনগণের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
সংক্ষেপে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান দলীয় ঐক্য ও রাজনৈতিক শক্তি পুনর্গঠনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন প্রাণ সঞ্চার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ