ছবি: সংগৃহীত
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, বিএনপি এত দিন ধরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে থেকে জুলাই সনদে স্বাক্ষরের পর এখন বলছে, আমরা এটা মানি না। বিএনপি বর্তমানে অন্যায়ভাবে এই সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার এলাকায় কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিক্যাল কলেজ মিলনায়তনে ‘ভোটকেন্দ্র পরিচালক’ সমাবেশে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াত এই সমাবেশের আয়োজন করে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের কুমিল্লা অঞ্চলের টিম সদস্য আবদুস সাত্তার, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মোহাম্মদ শাহজাহান, কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মাহবুবর রহমান, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির সাহাব উদ্দিন প্রমুখ।
ডা. তাহের বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে একমত হয়ে আমরা সবাই জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছি। সব কিছু পর্যালোচনা শেষে সবাই একমত হয়েছি, একটি সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদকে গ্রহণ করা হবে এবং এটার ওপর একটা গণভোট হবে। গণভোটের পর যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনের সংসদের মাধ্যমে ২৭০ দিনে এটাকে সংবিধানে যুক্ত করা হবে।
সব কিছু ঠিক, আমরাও রাজি, বিএনপিও রাজি। কিন্তু হঠাৎ করে বিএনপি পল্টি নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি সংস্কার না মানে, তাহলে এই প্রক্রিয়া শুরুর আগে তারা বলতে পারত। তখন হয়তো বিএনপি ছাড়াই জুলাই সনদ হতো বা হতো না।
এতগুলো রাজনৈতিক দলের সময় নষ্ট করে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে সবাই যখন একটি জায়গায় পৌঁছেছে, তখন বিএনপি সংস্কারের বিরোধিতা করছে। জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই বলছে, গণভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় নিয়েই সংস্কার করতে হবে। কারণ জনগণই ক্ষমতার উৎস। এখন বিএনপি বলছে, আমরা গণভোট মানি, তবে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই সঙ্গে হতে হবে। গণভোট হচ্ছে সংস্কারের জন্য, আর জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে সরকার গঠনের জন্য।
তাহের বলেন, ‘যদি নির্বাচন না হয়, তাহলে তো বিএনপির কোনো লাভ দেখছি না। তাহলে তারা এমনটা কেন করছে, আমার বুঝে আসে না। নির্বাচন না হলে যারা ভারতে বসে ষড়যন্ত্র করছে, তারাই আরেকটি সুযোগ পাবে। আচরণ দেখে মনে হচ্ছে বিএনপি সংস্কারবিহীন যে বাংলাদেশ আমরা আওয়ামী লীগের সময় দেখেছি, সেই বাংলাদেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
নভেম্বরে গণভোট দিয়ে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে : পরওয়ার
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নভেম্বরে গণভোট দিয়ে ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
গতকাল শুক্রবার খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে ডুমুরিয়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে। এবার হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামী সরকার। যারা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে হিন্দুদের ভয়-হুমকি দিচ্ছে তাদের হুমকিতে এবার হিন্দুরা ভয় পাবে না। হিন্দুদের কেউ বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। এখন হিন্দুদের স্লোগান—‘সব মার্কা দেখা শেষ, দাঁড়িপাল্লার বাংলাদেশ।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’
সমাবেশে মতুয়া সংঘের সভাপতি ডা. সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মণ্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’
উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যক্ষ দেব প্রসাদ মণ্ডলের পরিচালনায় বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি ও অতিরিক্ত জিপি অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন প্রমুখ। এর আগে হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



