সাগরে নতুন লঘুচাপের সতর্কতা, ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় নতুন একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর প্রভাবে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার জন্য এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বর্তমানে উত্তর ছত্তিশগড় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি অগ্রসর হয়ে বিহার ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হতে পারে। তবে নতুন লঘুচাপটি পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী দিনগুলোতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।

৩১ অক্টোবর (শুক্রবার) রাত থেকে:

রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগ: অধিকাংশ স্থানে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি।

ঢাকা, খুলনা, সিলেট বিভাগ: অনেক জায়গায় বৃষ্টি।

বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগ: কিছু এলাকায় বৃষ্টি; কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিও হতে পারে।

এ সময় সারাদেশে দৈনিক তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে, রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

১ নভেম্বর (শনিবার):

ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ স্থানে বৃষ্টি।

ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি।

কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি।

২ নভেম্বর (রোববার):

ঢাকা ও সিলেটের কিছু স্থানে বৃষ্টি।

রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি।

৩ নভেম্বর (সোমবার):

চট্টগ্রাম অঞ্চলের দু-এক জায়গায় বৃষ্টি।

অন্যত্র শুষ্ক ও আংশিক মেঘলা আবহাওয়া।

৪ নভেম্বর (মঙ্গলবার):

চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের দু’এক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে।

বর্ধিত পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা ধীরে ধীরে কমে আসবে।

নতুন লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনার কারণে আবহাওয়া অধিদফতর সবকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত ও বজ্রবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি এবং শুষ্ক এলাকার কৃষি ক্ষতি হতে পারে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, নদীর কাছাকাছি ও নিম্নাঞ্চলে থাকা মানুষদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরাসরি সাগর-সৈকত ও সমুদ্রযাত্রা এড়িয়ে চলাও জরুরি।

সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে জলবায়ু পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনে মানবিক ও জরুরি সহায়তা দ্রুত কার্যকর করার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা আরও সতর্ক করেছেন, ভাসমান লঘুচাপ শুধু বৃষ্টিপাত নয়, বরং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রপাত, ভূমিধস এবং গাছপালার ক্ষতিও ঘটাতে পারে। তাই জনগণকে সতর্কতা অবলম্বন করে আবহাওয়া সংক্রান্ত সকল সতর্কতা ও বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এভাবে আগামী কয়েকদিন দেশের উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বিভিন্ন খাতে প্রভাব ফেলতে পারে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ ও প্রস্তুতি অব্যাহত রয়েছে।