
ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতির বিষয়টি আগামী সংসদের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। জনগণ ও সংসদের প্রতিনিধিরা যদি মনে করেন পিআর পদ্ধতিতে যাবেন, তাহলেই সে পদ্ধতি হবে।’ গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক মতবিনিময়সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে এই মতবিনিময়সভা করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পিআর অনেক দেশেই আছে। কিন্তু এটার সঙ্গে আমাদের দেশের মানুষ খুব বেশি পরিচিত না। আমরা বুঝি এক ব্যক্তি, এক ভোট। এই পদ্ধতিতে ৫০ বছরেরও আগে থেকে এখানে নির্বাচন হয়েছে, সংসদ ও সরকার গঠন হয়েছে।
এখন হঠাৎ করে যখন বিষয়টি আসছে, তার জন্য আন্দোলন হচ্ছে, তখন কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই যাঁরা দ্রুত নির্বাচন চান দেশে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য, তাঁরা ও আমরা উদ্বিগ্ন হই। সে জন্য আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, এই বিষয়টি (পিআর) আগামী পার্লামেন্টের ওপরে ছেড়ে দিতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন পিআর দিলে জনগণ বুঝবেই না। এখানে একটা বড় সমস্যা—ব্যক্তির যে স্বাধীনতা থাকে তার প্রতিনিধি পছন্দ করার, সেই স্বাধীনতা খর্ব হয়।
দলকেই বেছে নিতে হবে, দলকেই ভোট দিতে হবে। দল রিপ্রেজেন্টেটিভ নমিনেশনের পরে তাদেরকে পার্লামেন্টে আসতে হবে। এটার সঙ্গে আমাদের দ্বিমত।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকের রাজনীতিতে একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে আমরা যে স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলাম একটি আলাদা পরিচয়ের জন্য, সে পরিচয় ভুলিয়ে দিয়ে নতুন করে কতগুলো চিন্তা-ভাবনা সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এটা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছিল। মানুষের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই চেতনাকে আমরা ধারণ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজ বাংলাদেশকে একটা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখানোর জন্য বিভিন্ন রকমের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমরা সবাই বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। আমরা খুব আশা করে আছি যে আগামী নির্বাচনে জনগণ আরেকবার রায় দেবেন যে বাংলাদেশের মানুষ সত্যিকার অর্থেই অসাম্প্রদায়িক। তারা বাংলাদেশি জাতীয়তা বিশ্বাস করে।’
অনুষ্ঠানে খ্রিস্টান ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট আলবার্ট রোজারিওর সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ খ্রিস্টান ফোরামের নেতা অনিল লিও কস্তার সঞ্চালনায় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, বিএনপির ধর্মবিষয়ক সহসম্পাদক জন গোমেজ, রমেশ দত্ত, নির্বাহী কমিটির সদস্য সুশীল বড়ুয়া, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রমুখ।
বাংলাবার্তা/এমএইচ