
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ হঠাৎ হ্যাকিংয়ের শিকার হয়েছে। এই ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের কথা জানানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি বার্তা প্রচারের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত এই পেজটি কিছু সময়ের জন্য অননুমোদিত নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এ সময় পেজটি থেকে একাধিক অপ্রাসঙ্গিক ও অননুমোদিত কনটেন্ট শেয়ার করা হয়, যা সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের জনপ্রিয় এই সামাজিক প্ল্যাটফর্মটি হঠাৎ করে নিরাপত্তা বিঘ্নে পড়ায় বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হচ্ছে। পেজটি সাধারণত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কূটনৈতিক তৎপরতা, রাষ্ট্রীয় সফর ও বিবৃতি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রচারের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের একটি মাধ্যমের সাইবার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় সেটি শুধু একটি প্রযুক্তিগত সমস্যা নয়, বরং রাষ্ট্রীয় তথ্য সুরক্ষার দিক থেকে বড় ধরনের উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে পেজটির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে এবং সেটি রক্ষণাবেক্ষণের আওতায় রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়। একইসঙ্গে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা রোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সর্বোচ্চ আধুনিকীকরণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে এ বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, পেজটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের প্রতি অনুরোধ জানানো হচ্ছে—পেজ থেকে প্রকাশিত কোনো বার্তা, ঘোষণা বা পোস্টে যেন কেউ বিশ্বাস না করেন, তা শেয়ার না করেন এবং এতে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিভ্রান্তির অংশ না হন। এই সময়ের মধ্যে যদি কেউ কোনো বার্তা পান বা দেখেন, তাহলে সেটিকে যাচাই না করে গ্রহণ না করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে সর্বসাধারণকে সরকারি তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং অন্যান্য নির্ভরযোগ্য ও যাচাইকৃত উৎস ব্যবহারের জন্যও অনুরোধ জানানো হয়েছে। এমনকি যেকোনো সন্দেহজনক বার্তা বা পোস্ট দেখতে পেলে তা রিপোর্ট করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও একবার প্রমাণ হলো—সাইবার নিরাপত্তা আজ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। যে কোনো ধরনের তথ্য নিরাপত্তা লঙ্ঘন কেবল প্রযুক্তিগত ক্ষতিই নয়, রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও জনসচেতনতার ওপরও ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ