 
					ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে গণভোট আয়োজনের দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি ও নির্দেশনা দিতে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে কমিশন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরের প্রধানদের বিস্তারিতভাবে নির্দেশনা দেন এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি ত্বরান্বিত করার দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবদের পাশাপাশি পররাষ্ট্র, অর্থ, আইন ও বিচার বিভাগের প্রধানরা। এছাড়া আরও ৩১টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন এবং নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বৈঠকে গণভোট ও সংসদ নির্বাচনের সুষ্ঠু ও সমন্বিত প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে ভোটকেন্দ্র সংক্রান্ত প্রস্তুতি, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল, যানবাহন ও লজিস্টিক সাপোর্ট, সিসি ক্যামেরা সচল রাখা, হেলিপ্যাড সংস্কার, স্বাস্থ্য ও মেডিকেল টিম গঠন, বিদ্যুৎ সরবরাহ, রাস্তা মেরামত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রস্তুতি বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়। সিইসি এবং কমিশনাররা সকল সচিবকে বলেছেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে ভোট একই দিনে হবে নাকি পৃথক দিনে, তা নির্বিশেষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সব ধরনের প্রস্তুতি রাখবে।
বৈঠকে সিইসি বলেন, ভোটকেন্দ্রের তালিকা ইতিমধ্যেই প্রাথমিকভাবে তৈরি করা হয়েছে। একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হলে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও লজিস্টিক সাপোর্টের প্রয়োজন বাড়বে। সেই কারণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে নিরাপদ ও সহজ যাতায়াত, ভোটারদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্য এবং নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করা বৈঠকের মূল লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিকে সিইসি নির্দেশ দিয়েছেন, নির্বাচন ও গণভোটের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থান করতে হবে এবং তা যথাসময়ে বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সভায় প্রতিটি উপজেলার ভোটকেন্দ্রে মেডিকেল টিম গঠন, বিশেষভাবে দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টার ল্যান্ডিং ব্যবস্থা, প্রবাসী ভোটার ও সরকারি কর্মকর্তাদের পোস্টাল ভোট ব্যবস্থা কার্যকর করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
নির্বাচনি প্রচার ও জনসচেতনতার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ভূমিকার ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সিইসি বলেছেন, সংসদ টেলিভিশন ও বিটিভি নিউজের ফ্ল্যাশ বার্তা ব্যবহার করে ভোটারদের সচেতন করা হবে। এছাড়া বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আগমনসহ ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত করার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সভায় আইনশৃঙ্খলা, নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং রাস্তা মেরামত, ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা সচল রাখা, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রতিরোধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার এবং পোস্টাল ভোটিংয়ের জন্য ট্রায়াল অ্যাপ তৈরি করার পরিকল্পনা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, সরকারি ও নির্বাচনি কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থা ও মন্ত্রণালয়কে ব্যয় সাশ্রয়ীভাবে কাজ করতে হবে এবং নির্বাচনের দিন যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সারা দেশের হেলিপ্যাড, সড়ক ও ভোটকেন্দ্র পূর্বপ্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।
বৈঠক শেষে সিইসি এবং কমিশনাররা সকল সচিবকে আবারও সতর্ক করে বলেন, গণভোটের যেকোনো পরিস্থিতি বা তার তারিখ নির্বিশেষে প্রস্তুতি রাখতে হবে। নির্বাচনের সুষ্ঠু আয়োজন নিশ্চিত করা এবং ভোটারদের জন্য সহজ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করাই কমিশনের মূল লক্ষ্য।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
 
				.png)
.png)
.png)



