 
					ছবি: সংগৃহীত
ভারতের মুম্বাই শহরের পাওয়াই এলাকায় বৃহস্পতিবার এক ভয়ঙ্কর জিম্মি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যেখানে পুলিশের তৎপর অভিযানে ১৭ জন শিশুকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থল ছিল একটি স্টুডিও, যেখানে অভিযুক্ত রোহিত আর্য নামের এক যুবক শিশুদের জিম্মি করে রাখে। পুলিশ অভিযান শুরু করার সময় অভিযুক্তের সঙ্গে গুলিবিনিময় হয়, যার ফলে রোহিত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
পুলিশের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রোহিত আর্য একজন ৩৮ বছর বয়সী স্টুডিও কর্মী এবং ইউটিউবার। তিনি কয়েকদিন ধরে শিশুদের ওয়েব সিরিজে অভিনয়ের জন্য অডিশন নিতেন। বৃহস্পতিবার দুপুর পোনে দুইটার দিকে পুলিশের কাছে ফোন আসে, যেখানে বলা হয়, রোহিত শিশুদের জিম্মি করে রেখেছে। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে একটি বড় দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিশুদের নিরাপদে উদ্ধারের জন্য প্রস্তুতি নেয়।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ রোহিতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। তবে তিনি শিশুদের ছেড়ে দিতে রাজি হননি এবং হুমকি দেন, কেউ কোনো চালাকি করলে তিনি স্টুডিওতে আগুন ধরিয়ে দেবেন। এরপরই পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্টুডিওর ভেতরে ঢুকে অভিযান চালায়। দুই ঘণ্টার চরম চাপের পর শিশুদের নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। উদ্ধারকৃত শিশুদের বয়স ছিল ৮ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে।
রোহিত আর্য পুলিশের উপর এয়ারগান দিয়ে গুলি চালাতে থাকেন, যা পাল্টা গুলিতে রোধ করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে গুলি তার বুকের ডান দিকে লাগে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জানা গেছে, এই ঘটনায় আগে রোহিতের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে তিনি বলেন, ‘আমি রোহিত আর্য। আত্মহত্যা না করে একটি পরিকল্পনা করেছি, কিছু শিশুকে নিজের জিম্মিতে রাখছি। আমার কিছু নৈতিক দাবি এবং কিছু প্রশ্ন আছে, আমি কিছু লোকের সঙ্গে কথা বলতে চাই। আমি টাকাপয়সা চাই না, আমি সন্ত্রাসবাদী নই।’ ভিডিওতে তিনি হুঁশিয়ারি দেন, কেউ যদি তাঁর সঙ্গে চালাকি করে, তবে স্টুডিওতে আগুন লাগিয়ে দেবেন।
পুলিশ জানিয়েছে, শিশুদের উদ্ধার করে দ্রুত নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শিশুদের মানসিক ও শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য চিকিৎসা ও কনসেলিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযানের সময় পুলিশি তৎপরতা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে বিপুল সংকট এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
ঘটনাটি মুম্বাই এবং সমগ্র ভারতের জন্য একটি সতর্কবার্তা স্বরূপ। বিশেষ করে শিশুদের সঙ্গে অনৈতিক ও বিপজ্জনক আচরণের বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা আবারও浮্র্যক্ত হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, রোহিত আর্য স্টুডিও ও অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে শিশুদের নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা করছিলেন। আগামীদিনে তার সঙ্গে যুক্ত সম্ভাব্য সহযোগীদের খুঁজে বের করা এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, শিশুদের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে নিয়মিত মনিটরিং এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সমস্ত স্টুডিও এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নজরদারি বাড়ানো হবে। এছাড়া এই ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে শিশু ও অভিভাবক সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
 
				.png)
.png)
.png)



