
ছবি: সংগৃহীত
‘জংলি’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে ফের আলোচনায় আসেন চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। সিয়াম আহমেদের বিপরীতে সিনেমাটিতে অভিনয় করে নতুন করে নজর কাড়েন তিনি। ছোটবেলায় শিশুশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী এই অভিনেত্রী বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে জনপ্রিয় মুখ। যদিও ‘জংলি’র পর আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি তাকে, তবুও দীঘি থেমে নেই। সামনে তার হাতে রয়েছে একাধিক সিনেমা ও ওটিটি প্রজেক্ট।
সম্প্রতি এক গণমাধ্যমকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের অভিনয়জীবনের বর্তমান অবস্থা, ব্যস্ততা, আয় এবং ব্যক্তিগত পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেন দীঘি। বলেন, বর্তমানে নিয়মিত সিনেমা ও ওয়েব কনটেন্টে কাজ করছেন তিনি। এর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায়ও সক্রিয় রয়েছেন। বিশেষ করে টিকটকে মামার সঙ্গে তার বানানো ভিডিও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
অন্যান্য তারকাদের মতো নিজের উপার্জন নিয়ে গোপনীয়তা না রেখে অকপটে বললেন দীঘি, মাসে কত আয় করেন তিনি। দীঘি বলেন, “যদি কাজ বেশি থাকে তাহলে মাসে ৫ লাখ টাকার বেশি ইনকাম হয়। কখনো কখনো সেটা ৭ লাখ পর্যন্ত চলে যায়। আবার কোনো সময় ইনকাম নেমে আসে এক থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ মাসে কত আয় হবে, তা নির্ভর করে কাজের ওপর।”
চলচ্চিত্র ও ওয়েব প্রজেক্টের বাইরে ব্র্যান্ড প্রোমোশন ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও আয় হয় তার। এছাড়া বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করে মাঝে মাঝে ভালো অঙ্কের অর্থ উপার্জন করছেন তিনি।
প্রেম-বিয়ে নিয়ে বরাবরই ভক্তদের আগ্রহ থাকে প্রার্থনা ফারদিন দীঘিকে ঘিরে। এবার নিজেই জানালেন, আপাতত বিয়ের কোনো পরিকল্পনা নেই তার। বলেন, “বিয়ে নিয়ে এখনো ভাবছি না। আমি চাচ্ছি, অন্তত আরও দশ-পনেরো বছর কাজ করে ক্যারিয়ারে নিজের মতো করে একটা জায়গা করে নিতে। যখন মনে হবে, নিজের ক্যারিয়ারে যা চেয়েছিলাম, তার সবটুকু অর্জন করেছি— তখনই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেবো।”
এই মুহূর্তে নিজের ক্যারিয়ারকে ঘিরেই তার সমস্ত মনোযোগ। তার মতে, এখন বিয়ে করলে জীবন ও ক্যারিয়ার দুটোকেই ঠিকভাবে পরিচালনা করা কঠিন হয়ে যাবে।
টিকটকে দীঘির ভক্তসংখ্যা অগণিত। নিয়মিত নানা ধাঁচের ভিডিও দিয়ে সাড়া ফেলেন তিনি। এসব ভিডিওতে প্রায়ই দেখা যায় তার মামাকে। কীভাবে টিকটকে মামার প্রবেশ, তা নিয়ে মজার এক অভিজ্ঞতার কথা শোনান দীঘি।
তিনি বলেন, “আমার ছোটবেলায় নিজের ফোন ছিল না। তখন মামার ফোনে টিকটক ডাউনলোড করি। এরপর তাকে জোর করে ভিডিওতে আনি। প্রথমে খুব অনিচ্ছা ছিল তার, কিন্তু পরে দেখি মানুষ সেটা দেখছে, লাইক করছে। তখন মামাও মজা পেতে শুরু করেন। এখন তিনিই মাঝে মাঝে ভিডিও বানাতে বলেন।”
দীঘির ভাষায়, “অনেকে শুটিংয়ে অ্যাসিস্টেন্ট নিয়ে যায়, আর আমি যাই আমার গার্ডিয়ান— মানে আমার মামাকে নিয়ে।”
প্রার্থনা ফারদিন দীঘির শৈশব থেকেই বড় পর্দার সঙ্গে সম্পর্ক। প্রয়াত অভিনেত্রী দোয়েল ও সুব্রত চক্রবর্তীর মেয়ে হিসেবে তার রক্তেই মিশে আছে অভিনয়ের ধারা। শিশুশিল্পী হিসেবে ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘চাচ্চু’, ‘দাদীমা’সহ একাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করে দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি।
বর্তমানে তিনি পড়াশোনার পাশাপাশি সিনেমা, ওয়েব সিরিজ এবং ব্র্যান্ড প্রোমোশনসহ বিভিন্ন মাধ্যমেই সক্রিয়। দীঘির ভাষ্য, ভবিষ্যতে নিজেকে আরও পরিণত ও শক্তিশালী একজন অভিনেত্রী হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তিনি চান, তার কাজ দিয়ে দর্শকের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলতে।
দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে শিশুশিল্পী থেকে পূর্ণাঙ্গ নায়িকা হয়ে ওঠার এই যাত্রা তার জন্য যেমন চ্যালেঞ্জিং, তেমনি আনন্দেরও। এখন শুধু অপেক্ষা দীঘির পরবর্তী প্রজেক্টগুলোতে আবার নতুন করে আলোচনায় আসার।
বাংলাবার্তা/এমএইচ