
ছবি: সংগৃহীত
ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রচারিত নাটক ‘আশিকি’ দিয়ে যেন ফের নিজের ক্যারিয়ারে এক অনন্য মাইলফলক স্পর্শ করেছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা ফারহান আহমেদ জোভান। মাত্র একদিনেই নাটকটি দেখে ফেলেছেন ৬০ লাখের বেশি দর্শক, যা বাংলা নাটকের ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। নাটকটি বর্তমানে ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে এক নম্বরে রয়েছে এবং দু’দিনের মাথায় ভিউ সংখ্যা পৌঁছে যায় ৯০ লাখ ছাড়িয়ে।
‘আশিকি’–তে রোমান্টিক ও আবেগঘন চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মন জয় করে নেওয়া এই তরুণ অভিনেতাকে ঘিরে এবার নতুন এক আলোচনার ঢেউ উঠেছে। কারণ, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একটি ছবি, যেখানে জোভানকে দেখা গেছে ঢালিউডের কিংবদন্তি তারকা শাকিব খানের পাশে দাঁড়িয়ে। এক ফ্রেমে দুই প্রজন্মের দুই তারকা—যেখানে একজন দীর্ঘদিন ধরে বড় পর্দা কাঁপাচ্ছেন, আর অপরজন ছোট পর্দায় দারুণভাবে প্রতিষ্ঠিত—এমন দৃশ্য যে জল্পনা-কল্পনার জন্ম দেবে, তা বলাই বাহুল্য।
ছবিটি পোস্ট করার পরপরই অনেকে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন—তাহলে কি এবার বড় পর্দায় অভিষেক হতে যাচ্ছে জোভানের? অনেকেই উল্লেখ করেন সাবিলা নূরের নাম, যিনি নাটক থেকে সরাসরি ‘তাণ্ডব’ সিনেমায় অভিনয় করে বড় পর্দায় নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। ঠিক তেমনি কি কোনো সিনেমায় দেখা যাবে জোভানকে শাকিব খানের পাশে?
জানা গেছে, ছবিটি ছিল একটি অনানুষ্ঠানিক আয়োজনে তোলা। সে আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বর্তমান প্রজন্মের জনপ্রিয় অভিনেতা সিয়াম আহমেদ, শরীফুল রাজ, তৌসিফ মাহবুব এবং নির্মাতা মোস্তফা কামাল রাজসহ আরও অনেকে। তাদের মধ্যে দেখা হয় জোভান ও শাকিব খানের।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে জোভান বলেন, “আমাদের হঠাৎ করেই একটি আয়োজনে দেখা হয়ে যায়। পরিবেশটাই ছিল এমন যে মনে হলো, একটি ছবি তুলে রাখা যাক। মুহূর্তটা স্মরণীয় করে রাখতেই ছবিটি তোলা হয়েছে। এর বাইরে ছবির কোনো ব্যাখ্যা নেই।”
শাকিব খানের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি দেখা হওয়া নিয়ে জোভান বলেন,
“শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হওয়া আমার জন্য এক দারুণ অভিজ্ঞতা। যতটুকু সময় তার সঙ্গে কথা বলেছি, বুঝেছি তিনি একজন অত্যন্ত বিনয়ী ও ভদ্র মানুষ। তার ব্যক্তিত্ব অসাধারণ। এটা আমার জীবনে তার সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়া, এবং সত্যি বলছি, ভালো লেগেছে।”
তবে ছবিটি ঘিরে যে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে সরাসরি মত দিয়েছেন জোভান। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, এখনই সিনেমায় কাজ করার কোনো পরিকল্পনা নেই তার।
“সিনেমা আমার কাছে অনেক বড় মাধ্যম। এর জন্য আরও প্রস্তুতি দরকার। আমি এখনো মনে করি, আমার নাটকের ভুবনে আরও কাজ বাকি রয়েছে। আরও নিজেকে গড়তে চাই, অভিনয়ে আরও গভীরতা আনতে চাই। সিনেমা করার মতো নিজেকে পুরোপুরি প্রস্তুত মনে করছি না। তাই আপাতত সিনেমায় নাম লেখানোর চিন্তা নেই।”
এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে, জোভান সিনেমায় কাজের প্রস্তাব পেতে পারেন, এমন সম্ভাবনা থাকলেও তিনি এখনই সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে প্রস্তুত নন। তিনি ধাপে ধাপে নিজেকে গড়ে তোলার পক্ষপাতী।
তবে ভক্তরা থেমে নেই। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, “শাকিব ভাইয়ের পাশে জোভান মানে পর্দা কাঁপানো কোনো প্রজেক্ট আসছে বুঝি?”—আবার কেউ কেউ লিখেছেন, “জোভান চাইলে এখনই সিনেমায় নিজের জায়গা করে নিতে পারবেন, তাঁর অভিনয়ে এক ধরনের বাস্তবতা আছে যা বড় পর্দায়ও কাজ করবে।”
শোবিজ বিশ্লেষকরাও বলছেন, টেলিভিশন ও ওয়েবভিত্তিক জনপ্রিয়তা যেমন জোভান পেয়েছেন, তা বর্তমান প্রেক্ষাপটে তাকে বড় পর্দার জন্য দারুণভাবে প্রস্তুত করছে। কিন্তু নিজেকে ভাঙার যে ইচ্ছা তার মধ্যে রয়েছে, তা তাকে ভবিষ্যতে একজন পরিপূর্ণ চলচ্চিত্র অভিনেতায় পরিণত করতে পারে।
ছবির পেছনের বাস্তবতা যা-ই হোক, এই এক ফ্রেমে দাঁড়িয়ে থাকা মুহূর্তটি শুধু একটি স্মরণীয় ছবি হয়ে থাকবে না। এটি হয়ে উঠেছে সম্ভাবনার বার্তা, যা জোভানকে ঢালিউডের আগামী দিনের নায়ক হিসেবেও কল্পনা করতে বাধ্য করছে অনেককেই। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা—তাকে পর্দায় শাকিব খানের পাশে দেখা যাবে কি না, আর যদি যায়, তবে তা কোন গল্পে, কোন নির্মাতার ক্যামেরায়? উত্তরের অপেক্ষায় বাংলা সিনেমাপ্রেমীরা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ