
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন
গিয়েছিলেন শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে। এখন সেই মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন দুবাইয়ে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। বাংলাদেশে থেকে নানা রকমের সবজি এবং ফল আমদানি করেন মোজাম্মেল। এখন বছরে ১৬ থেকে ২০ লাখ ডলার সমমূল্যের পণ্য বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে নিয়ে যান মোজাম্মেল এবং তাঁর দাদা আবুল হাসনাত।
চট্টগ্রামের বাসিন্দা তাঁরা। নিজের দেশ থেকে আলু, কাঁকরোল, ঢ্যাঁড়স, বেগুন, মুলা, ফুলকপি, পেঁপে, শিমসহ নানা রকম সবজি নিয়ে গিয়ে দুবাইয়ে পাইকারি হিসাবে বিক্রি করেন তাঁরা। সেই সঙ্গে নিয়ে যান নানা রকম মরশুমি ফল। দুবাইয়ে আম, কাঁঠাল ও জামের চাহিদা বেশি।
এখন সেখানে এই সব সবজি এবং ফলের ব্যবসা করেই সাফল্য পেয়েছেন মোজাম্মেল। এর জন্য তিনি স্বীকৃতি পেয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের কাছেও। গত ১৮ তারিখে বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে তিনি পেয়েছেন ‘জাতীয় রফতানি ট্রফি’। তাঁর হাতে সিআইপি (এনআরবি) অ্যাওয়ার্ড-২০২০ তুলে দেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
তবে, এই সাফল্য একদিনে আসেনি। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর গড়দুয়ারা এলাকার বাসিন্দা মোজাম্মেল হোসেন উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পরে চলে যান দুবাই। সেখানে আগে থেকেই শ্রমিক হিসাবে কাজ করছিলেন আবুল হাসনাত। ২০০৭ সালে সেখানে গিয়ে মোজাম্মেলও শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে ২০১৩ সালে ভিসা সংক্রান্ত সমস্যায় পড়েন তিনি। সেখানে কী করবেন তা প্রথমে বুঝতে পারছিলেন না। তারপরে দাদার সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশে থেকে দুবাইয়ে সবজি এবং ফল আমদানি করতে শুরু করেন তিনি।
মোজাম্মেল জানান, তাঁরা সেই সময়ে দেখেন দুবাইয়ে বাজার আছে বাংলাদেশি সবজি ও মরশুমি ফলের। তাই তাঁরা সেখানে ব্যবসার জন্য একটি পার্টনারশিপ ভিসা করেন। ফল এবং সবজি আমদানি করার প্রতিষ্ঠানের নাম দেন মো. মোজাম্মেল হোসেন ফ্রুট অ্যান্ড ভেজিটেবল ট্রেডিং। প্রথমে মাত্র ১ টন সবজি নিয়ে যান তাঁরা। আমদানি করা সবজির চাহিদা বাড়তে থাকে সেখানে। পরে, আরও বেশি সবজি এবং ফল দুবাইয়ে আমদানি করতে শুরু করেন তিনি। আমদানি করা হয় ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা থেকেও।
এখন দুবাইয়ের সবচেয়ে বড় সবজিবাজারেই অফিস করেছেন তাঁরা। এখন সবজি দুবাইয়ে বাইরে কাতার এবং বাহরাইনেও পাঠানো হয়। তিনি জানান এখন তাঁর অফিসে কাজ করেন ৪৩ জন। তাদের মধ্যে ৩৯ জন বাংলাদেশের। তাঁর লক্ষ্য আগামী দিনে ব্যবসা আরও বাড়ানোর। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের আরও কয়েকজনকে সেখানে নিয়ে গিয়ে কর্মী হিসাবে নিয়োগ করার।