
সিবিআইআর ত্রিপুরা চ্যাপ্টারের উদ্যোগে বরীন্দ্র-নজরুল জন্মজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন আগরতলা বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনের প্রথম সচিব মো. আল আমীন। ছবি: শান্তনু শর্মা
ত্রিপুরা(ভারত): ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কেন্দ্র তথা সিবিআইআর ত্রিপুরা চ্যাপ্টারের উদ্যোগে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সাম্যবাদের কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ‘হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ - চেতনায় নজরুল’ শীর্ষক এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বুধবার (৩১ মে) আগরতলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক আরশিকথা বহুমাত্রিক সংবাদ মাধ্যম। প্রসঙ্গত, আগরতলায় সিবিআইআরের উদ্যোগে এটি দ্বিতীয় অনুষ্ঠান।
গত ১৮ মার্চ আগরতলার রবীন্দ্র ভবনে অনুষ্ঠিত একটি নান্দনিক অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুণীজন সহ সংবাদ ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের সম্মাননা প্রদানের মধ্য দিয়ে এই আন্তর্জাতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ত্রিপুরা চ্যাপ্টারের শুভ সূচনা হয়। মূল সংগঠনের প্রধান পরিচালক বাংলাদেশের বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাহিদুল হাসান খোকন।
মূলত সংস্কৃতি চর্চা, খেলাধুলা, সামাজিক কর্মকাণ্ড ইত্যাদি করার মধ্য দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের ভিতকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে দুই দেশে নানা কাজ করে থাকে এই সংগঠন।
বুধবার সংগঠনের ত্রিপুরা চ্যাপ্টারের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ - চেতনায় নজরুল’ অনুষ্ঠানে রাজ্য এবং বাংলাদেশের গুণীজনেরা বিদগ্ধ আলোচনা সহ নানা পরিবেশনার মধ্য দিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সাম্যবাদের কবি কাজী নজরুল এর জীবন আদর্শকে সবার সামনে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে একক সঙ্গীত পরিবেশনায় ছিলেন রাজ্যের বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী সুদীপ্ত শেখর মিশ্র,অনিন্দিতা রায়, অরিজিতা ধর,বৈশালী মিত্র এবং সুস্মিতা দত্ত। এছাড়া সমবেত পরিবেশনায় ছিলো কবিতালোক, সুরের আলো এবং আরশিকথা গ্লোবাল ফোরামের শিল্পীরা।তবলা সহযোগিতায় ছিলেন রাজ্যের বিশিষ্ট তবলা বাদক নারায়ণ বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বেতারের বিশিষ্ট সংবাদ পাঠক রবিউল মাশরাফী। তিনি এই অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
পাশাপাশি তিনি উপস্থিত দর্শকদের একাগ্রতা এবং অভূতপূর্ব সঙ্গদানের কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন. মুক্তিযুদ্ধের তীর্থভূমি ত্রিপুরায় প্রথমবারের মতো এসে নিজের পরিবারের মতো সবাইকে অনুভব করেন।তিনি আরও বলেন দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়নে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল নিয়ে হৃদয় ও চেতনা সহকারে অনেক কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে তাকে পুষ্প স্তবক ও উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নেন মোসাহিদ আলী এবং তার হাতে সিবিআইআর সম্মাননা স্মারক তুলে দেন প্রধান অতিথি মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে শুভ সূচনা করেন রাজ্য মন্ত্রীসভার উল্লেখযোগ্য সদস্য শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, আগরতলা স্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রথম সচিব মো. আল আমীন, আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য, সিবিআইআর ত্রিপুরা চ্যাপ্টারের সভাপতি রঞ্জিত সাহা, সহ-পরিচালক পঙ্কজ রায়, তিনজন সহ-সভাপতি যথাক্রমে ড. প্রণতি মোদক, ড. আশিস কুমার বৈদ্য ও তপন কুমার দাস, বিশিষ্ট সাংবাদিক অমিত ভৌমিক, সম্পাদক ড. মোস্তাফা কামাল, সহ-সম্পাদক শ্রাবণী সরকার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুব্রত দেবনাথ, পরিচালন কমিটির সদস্য সমু সরকার এবং চন্দ্রা মজুমদার প্রমুখ।
এদিন প্রত্যেক অতিথিরা তাদের নিজ নিজ বক্তব্যে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল এর প্রাসঙ্গিকতা উল্লেখ করে দুই দেশের সম্পর্কে এক গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধন হিসাবে এই দুই কবির জীবন চর্চা অপরিহার্য বলে দাবি করেন।এদিন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড. আশিস কুমার বৈদ্য।সংস্থার পক্ষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তপন কুমার দাস। গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সংস্থার অপর সহ- সম্পাদক স্বপ্না দাশগুপ্ত।এছাড়াও এদিন অনুষ্ঠানে আরশিকথার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন টিঙ্কু রঞ্জন দাস, সসীম আচার্য, রতন আচার্য প্রমুখ। অনুষ্ঠানটিকে সার্বিক ভাবে সফল করে তোলার জন্য বিভিন্ন সহযোগী নিবেদক সহ উপস্থিত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন সিবিআইআর ত্রিপুরা চ্যাপ্টারের প্রধান সমন্বয়ক শান্তনু শর্মা।