
ছবি: সংগৃহীত
মালয়েশিয়ায় বৈধভাবে কাজ করা বিদেশি কর্মীদের তালিকায় সবার ওপরে এখন বাংলাদেশিরা। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (কেডিএন) সর্বশেষ তথ্য বলছে, বর্তমানে ৮ লাখ ৩ হাজার ৩৩২ জন বাংলাদেশি কর্মী সক্রিয়ভাবে অস্থায়ী ওয়ার্ক ভিজিট পাশ নিয়ে সেখানে কাজ করছেন। যা মালয়েশিয়ায় সক্রিয় বিদেশি শ্রমশক্তির ৩৭ শতাংশ। এই সংখ্যা বাংলাদেশকে দেশটির বিদেশি কর্মীদের প্রধান উৎসে পরিণত করেছে।
সংসদে উপস্থাপিত কেডিএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি পুনর্গঠনে বিদেশি শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা বাড়ে। সীমান্ত উন্মুক্ত হওয়ার পর ২০২২ সালে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেন প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক। পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে সরকার বিদেশি শ্রমশক্তি নিয়োগের ওপর শিথিল নীতি প্রয়োগ করলে বিপুলসংখ্যক কর্মী মালয়েশিয়ায় যায়। সেই বছরই প্রায় ৪ লাখ নতুন বাংলাদেশি কর্মী দেশটিতে কাজের সুযোগ পান।
তবে অন্যদিকে, অনেক শ্রমিককে ফেরতও পাঠানো হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ২০ হাজারের বেশি এবং ২০২৩ সালে আরও ২৩ হাজার বাংলাদেশিকে তাদের নিয়োগকর্তারা দেশে ফেরত পাঠায়। পাশাপাশি, ২০২২ ও ২০২৩ দুই বছরে মোট ৭৯০ বাংলাদেশিকে অবৈধভাবে অবস্থান করার কারণে আটক করা হয়।
বেরিতা হারিয়ানসহ মালয়েশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বাংলাদেশি কর্মীরা বর্তমানে উৎপাদনশীলতার মূল ভরসা। বিশেষ করে উৎপাদন শিল্প, কৃষি ও প্ল্যান্টেশন, নির্মাণ খাত এবং বিভিন্ন ধরনের সেবা খাতে তারা ব্যাপক অবদান রাখছে। এ কারণে শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের চাহিদা অব্যাহতভাবে বাড়ছে।
কর্মসংস্থান বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মালয়েশিয়ার অর্থনীতির জন্য বাংলাদেশিদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অবৈধ অভিবাসনের মতো সমস্যাগুলো সমাধানে আরও কঠোর আইন, আধুনিক ডিজিটাল ভিসা ব্যবস্থাপনা এবং স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সঠিকভাবে তা বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশি কর্মীরা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে আরও দীর্ঘমেয়াদি ও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবেন।
বাংলাবার্তা/এমএইচও