
ছবি: সংগৃহীত
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। গত কয়েকদিনে দুই দেশের মধ্যে সেনা অভিযান এবং পালটা হামলার ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে ভারতের উত্তরাঞ্চলের একাধিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার পর বিমান চলাচল বিঘ্নিত হয়েছে, এবং বিমান সংস্থাগুলো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তাদের ফ্লাইট বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে।
ভারতের সামরিক অভিযানের পর পাকিস্তানও পালটা হামলা শুরু করেছে। আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর ভারতের বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে জম্মু, শ্রীনগর, লেহ, জোধপুর, অমৃতসর, ভুজ, জামনগর, চণ্ডীগড় এবং রাজকোট পর্যন্ত বিমান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরগুলোর জন্য বিভিন্ন বিমান সংস্থা, যেমন এয়ার ইন্ডিয়া, স্পাইসজেট এবং ইন্ডিগো, যাত্রীদের সতর্ক থাকতে এবং যাত্রার পূর্বে ফ্লাইটের অবস্থা যাচাই করতে পরামর্শ দিয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার এক বিবৃতিতে জানানো হয় যে, বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত জম্মু, শ্রীনগর, লেহ, জোধপুর, অমৃতসর, ভুজ, জামনগর, চণ্ডীগড় এবং রাজকোট থেকে সব বিমান বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে যেসব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অমৃতসরগামী ছিল, সেগুলো দিল্লিতে নামানো হয়েছে। একইভাবে, স্পাইসজেট এবং ইন্ডিগো তাদের ফ্লাইট বাতিল করে এবং শ্রীনগর, জম্মু, অমৃতসর, লেহ, চণ্ডীগড় ও ধর্মশালায় বিমান চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
ভারতীয় সেনাদের সাম্প্রতিক অভিযানের লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানে সীমান্তে জঙ্গি আস্তানাগুলো ধ্বংস করা। এর জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে ভারতের পাঁচটি যুদ্ধ বিমান এবং একটি ড্রোন ধ্বংস করার দাবি করেছে পাকিস্তান। পাকিস্তান জানায়, ভারতীয় সেনারা পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করলে তাদের ড্রোনও গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।
তবে কাশ্মীরের পেহেলগাঁওতে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ ভারতীয় পর্যটক নিহত হওয়ার পর এই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভারত পাকিস্তানকে এই হামলার জন্য দায়ী করছে, যদিও পাকিস্তান হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। উক্ত হামলার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, এবং ভারতীয় সেনারা ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামক একটি অভিযানে পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
ভারত সরকার দেশের নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছে এবং উত্তেজনার মধ্যে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভ্রমণ পরিহার করতে বলা হয়েছে। এছাড়া, পাকিস্তানও ভারতীয় হামলাকে 'বিনা প্ররোচনায় কাপুরুষোচিত' আখ্যা দিয়েছে এবং পালটা জবাব দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর।
এই চলমান পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে, এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজনৈতিক, সামরিক ও কূটনৈতিক চাপ বেড়ে যেতে পারে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ