
ছবি: সংগৃহীত
আজ শুক্রবার ১৬ অক্টোবর, ৪৯তম (বিশেষ) বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চলবে এবং শুধুমাত্র ঢাকায় কেন্দ্রীভূতভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এটি একটি বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা, যেখানে সাধারণ বিসিএসের মতো প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেই; সরাসরি এমসিকিউ ধরনের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়।
পরীক্ষা সংক্রান্ত সরকারি সূত্র জানিয়েছে, এই বিশেষ বিসিএস পরীক্ষায় ৩ লাখ ১২ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে, যা দেশের ইতিহাসে বিসিএস পরীক্ষার মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ৬৮৩টি শূন্যপদের বিপরীতে গড়ে প্রতি পদে প্রায় ৪৫৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, প্রতিটি পদে সফল হওয়ার জন্য প্রার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে।
পরীক্ষার কাঠামো
লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ২০০ নম্বরের এমসিকিউ টাইপের হবে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পরবর্তী ধাপে ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়, পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সরকারি সাধারণ কলেজে বিভিন্ন বিষয়ে প্রভাষক এবং সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।
পদভিত্তিক বিস্তারিত
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সরকারি সাধারণ কলেজে ৬৫৩ জন প্রভাষক নেওয়া হবে এবং সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজে ৩০ জন শিক্ষক নিয়োগ হবে। শূন্যপদের মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যা রয়েছে বাংলা বিভাগের ৬১টি পদে, এরপর আসে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ৫৫টি, ইংরেজি ৫০টি, অর্থনীতি ৪০টি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ৩২টি, দর্শন ও রসায়ন ৩০টি করে। অন্যান্য বিষয়েও নিয়োগ করা হবে নির্ধারিত পদ অনুযায়ী।
আবেদনের তথ্য
পিএসসি ২১ জুলাই ২০২৫ সালে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই ৪৯তম বিশেষ বিসিএসের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু করে। আবেদন প্রক্রিয়া চলেছিল ২২ জুলাই থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত। অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন প্রার্থীদের জন্য ফি পরিশোধের সুবিধা দেওয়া হয় পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে, অর্থাৎ ২৫ আগস্ট রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত।
বিশেষ বিসিএসের স্বতন্ত্রতা
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই বিশেষ বিসিএসে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় না। সরাসরি লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন শুরু হয়, যা প্রার্থীদের জন্য একটি অনন্য সুযোগ। তবে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার জন্যও প্রস্তুতি নিতে হয়। এ ধাপে প্রার্থীর পাঠ্য জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা এবং বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা যাচাই করা হয়।
প্রার্থীদের প্রস্তুতি ও প্রতিযোগিতা
বছরের পর বছর ধরে বিসিএস পরীক্ষায় দেশজুড়ে প্রচণ্ড প্রতিযোগিতা থাকে। বিশেষ বিসিএস পরীক্ষার ক্ষেত্রে, ৩ লাখ ১২ হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়ায় প্রতিটি পদে ৪৫০–৪৬০ জনের মতো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিশেষ করে বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইংরেজি ও অর্থনীতি বিভাগের শূন্যপদগুলোতে উচ্চস্তরের শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছেন।
পরিশেষে, পিএসসি জানিয়েছে, পরীক্ষার সকল কেন্দ্রেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং পরীক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময় ও নিয়ম মেনে পরীক্ষা দিতে পারবেন। সরকার আশা করছে, ৪৯তম বিশেষ বিসিএসে দক্ষ ও যোগ্য প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে দেশের শিক্ষা খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন প্রভাষক ও শিক্ষক নিয়োগের সম্ভাব্য ফলাফল দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে বড় প্রভাব ফেলবে। প্রার্থী ও অভিভাবক উভয়েই অত্যন্ত আগ্রহীভাবে ফলাফলের দিকে নজর রাখছেন।
প্রয়োজনীয় পরিসংখ্যান
-
আবেদন জমা: ৩,১২,০০০+
-
শূন্যপদ: ৬৮৩
-
প্রতি পদে গড় প্রার্থী: ৪৫৬
-
লিখিত পরীক্ষা: ২০০ নম্বর
-
মৌখিক পরীক্ষা: ১০০ নম্বর
-
সর্বাধিক শূন্যপদ: বাংলা ৬১, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ৫৫, ইংরেজি ৫০, অর্থনীতি ৪০, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ৩২, দর্শন ও রসায়ন ৩০।
পরীক্ষা শেষে প্রার্থীদের ফলাফল ঘোষণার মাধ্যমে সরকারি কলেজে প্রভাষক ও শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ