ছবি: সংগৃহীত
শাপলা কলি নিয়েই নির্বাচন করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে দলটি ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে। নির্বাচনে ধানের শীষ এবং শাপলা কলির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
গতকাল রবিবার এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী এসব কথা বলেন।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে কথা বলেন তিনি।
এ সময় নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের প্রতি রাষ্ট্রকে গোপন প্রেমের কারখানা না বানানোর আহবান জানান। একই সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ তৈরি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘ইসি নতুন কিছু প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করেছে।
এখানে তারা শাপলা কলি নামে একটা প্রতীক রেখেছে। আমরা আজ (রবিবার) পছন্দের তালিকায় প্রথমে রেখেছি শাপলা, দ্বিতীয়তে রেখেছি সাদা শাপলা, তৃতীয়তে রেখেছি শাপলা কলি। আমরা এটা পজিটিভলি নিয়েছি এবং তাদের আহবান জানিয়েছি, দ্রুতগতিতে যাতে এনসিপির নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে, যেন আমরা মাঠে প্রতীক নিয়ে যেতে পারি।’
এনসিপি শাপলা কলি মেনে নিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা শাপলা কলি নেব।
জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মী এবং বাংলাদেশের মানুষকে আমরা আহবান জানাচ্ছি, আপনারা যাঁরা প্রার্থী হতে চান, ইলেকশনের প্রস্তুতি নিন। আমাদের অফিসে আসুন প্রার্থিতা জমা দিন।’
তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর মধ্যে আমরা শাপলা নিয়ে কিছু পজিটিভ সাড়া পেয়েছি। এটা শাপলা ছিল, এখন আরো এক ধাপ এগিয়ে হলো শাপলা কলি। অর্থাৎ শাপলাও আছে কলিও আছে।
তো সেই জায়গাতে আমরা যতটুক চিন্তা করেছি, নির্বাচন কমিশন আরো এক ধাপ বাড়িয়ে চিন্তা করেছে।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আপনারা শুনেছেন সালাহউদ্দিন আহমদ উপদেষ্টা আসিফ নজরুল স্যারকে একটা চিঠি দিয়েছেন। সেখানে উনাদের গোপন প্রেমের কথা বলেছেন। আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে যিনি রয়েছেন তাঁকে বলতে চাই, আপনারা রাষ্ট্রকে নিজেদের গোপন প্রেমের কারখানা বানাবেন না। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে জানাব, আপনার উপদেষ্টামণ্ডলীর যাঁরা রয়েছেন তাঁরা যদি বিভিন্ন দলের সঙ্গে এ ধরনের গোপন প্রেম করে থাকেন, তাহলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের যাত্রা ব্যাহত হবে।’
ভোটে জোট করবেন কি না জানতে চাইলে পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশে তো ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। সোশ্যালওয়েতে মসজিদগুলো দখল করা চলছে। জামায়াতে ইসলামীর যে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ, এই ফ্যাসিবাদে তো আমরা সঙ্গী হতে পারব না। আবার বিএনপির যে চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস, এটারও সঙ্গী হতে পারব না। আমরা চাই আগামীর পার্লামেন্টে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি এগুলো না থাকুক। ধর্মীয় ফ্যাসিবাদও না থাকুক।’
গণভোটের বিষয় কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে পাটওয়ারী বলেন, ‘গণভোট নিয়ে বিএনপি ও জামায়াত মুখোমুখি অবস্থানে আছে। আমরা দুই দলের কাছে আহবান রাখব, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। গণভোটের সময় নিয়ে কুতর্ক এড়িয়ে চলুন। গণভোট আগে দিলে যে উপকারিতা, ইলেকশনের দিন দিলেও একই উপকারিতা।’
বৈঠকে এনসিপির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশন বরাবর একটি চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে দলটি দুটি দাবি জানায়। এই দাবিগুলো হলো—কমিশনের গৃহীত এবং উপদেষ্টা পরিষদে পাস হওয়া আরপিওর অনুচ্ছেদ ২০-এর সংশোধনী অনুযায়ী গেজেট প্রকাশ করা হোক, যাতে প্রতিটি দল তাদের নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে বাধ্য থাকে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত যেন বিএনপির অন্যায় চাপের প্রভাবে পরিবর্তিত না হয়, সে বিষয় লিখিত নিশ্চয়তা প্রদান করা হোক।
এদিকে আইন উপদেষ্টা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধন না করতে বিএনপিকে আশ্বাস দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে গতকাল আসিফ নজরুলকে চিঠিও পাঠিয়েছে দলটি।
এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সময়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২০ অনুচ্ছেদ সংশোধনসংক্রান্ত আলোচনায় বিএনপিকে আপনার ব্যক্তিগত আশ্বাস ও অবস্থান নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, একজন উপদেষ্টা হিসেবে আপনি রাষ্ট্রের নিরপেক্ষ আইন উপদেষ্টা, কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নন। নির্বাচনী আইন সংশোধনের মতো বিষয়ে কোনো একটি রাজনৈতিক দলকে এককভাবে আশ্বাস প্রদান করা জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পদের নিরপেক্ষতা ও দায়বদ্ধতার পরিপন্থী।’
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



