
ছবি: সংগৃহীত
ছোটপর্দার পরিচিত মুখ, তরুণ প্রজন্মের দর্শকদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনুভা তিশা এবার নিজের ব্যতিক্রমী এক অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন—তিনি কখনও ক্রিকেট খেলা শেখেননি, তবে এখন সেই খেলাটিই রপ্ত করার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের শৈশব স্মৃতি, বর্তমান ব্যস্ততা ও বলিউডের প্রতি ভালবাসা নিয়ে অকপটে কথা বলেন এই অভিনেত্রী।
তাসনুভা তিশা জানান, ছোটবেলায় তিনি ক্রিকেট খেলতে খুব আগ্রহী ছিলেন। তার কথায়, “আমি কখনোই ক্রিকেট খেলা শিখিনি। এখন চেষ্টা করছি শেখার। তবে আমার ব্যাটিং অনেক পছন্দ।” শৈশবে এলাকার ছেলেদের ক্রিকেট খেলা দেখতে গিয়ে যে বঞ্চনার অভিজ্ঞতা তার হয়েছিল, সেটিও অকপটে প্রকাশ করেন তিশা। তিনি বলেন, “যখন ছেলেরা মাঠে খেলত, আমি দৌঁড়ে যেতাম আর বলতাম, আমাকেও খেলায় নাও। কিন্তু ওরা নিত না, কারণ আমার ব্যাট ছিল না।”
এই কথাগুলোতে ফুটে ওঠে একজন মেয়ের ছোটবেলার খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হবার এক অনুচ্চারিত বাস্তবতা। এখন সেই অপূর্ণতা পূরণ করতে চেষ্টারত তিশা যেন শুধুই ব্যাট হাতে নয়, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তেই নিজের চাওয়া-পাওয়ার ভারসাম্য গড়ার সংগ্রামে অদম্য।
বর্তমানে তিনি কুরবানি ঈদের নাটক ও টেলিফিল্ম নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঈদের বিশেষ আয়োজনে অংশ নিতে গিয়ে শুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে সময় বের করা বেশ কঠিন বলেই জানান তিনি। “এই তো কুরবানি ঈদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। শুটিং চলছে, সামনে আরও শুটিং আছে,” বলেন তিশা। কাজের চাপের মধ্যেও অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধের কারণে সময়মতো প্রতিটি চরিত্রে নিজেকে নিখুঁতভাবে উপস্থাপন করতেই চান তিনি।
বলিউড প্রসঙ্গ উঠলে তাসনুভা তিশার চোখে আনন্দের ঝলক দেখা যায়। তিনি বলেন, বলিউডের অনেক অভিনেতা ও অভিনেত্রী তার প্রিয়। তবে দীপিকা পাড়ুকোন এবং রাধিকা আপ্তে তার কাছে বিশেষ স্থান রাখেন। দীপিকার “চেন্নাই এক্সপ্রেস”-এর ডায়ালগগুলো তার খুবই মজার লাগে। অন্যদিকে রাধিকা আপ্তেকে তিনি অভিনয়ের দিক থেকে নিজের সবচেয়ে পছন্দের অভিনেত্রী হিসেবে উল্লেখ করেন। তার মতে, দীপিকা কর্মাশিয়াল সিনেমার জন্য বেস্ট, আর রাধিকা অভিনয়ের গভীরতা দিয়ে মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো শিল্পী।
তাসনুভা তিশা ২০১৩ সালে মডেলিংয়ের মাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনে প্রবেশ করেন। এরপর জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা কামাল রাজের নাটক ‘লাল খাম বনাম নীল খাম’-এর মাধ্যমে নাটকে অভিষেক ঘটে তার। ধীরে ধীরে নিজের অভিনয় দক্ষতা এবং স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি দিয়ে জায়গা করে নেন দর্শকদের হৃদয়ে। বর্তমানে তিনি নিয়মিতভাবে নাটক, টেলিফিল্ম এবং ওটিটি কনটেন্টে কাজ করছেন। সামাজিক মাধ্যমেও সক্রিয় উপস্থিতি রয়েছে তার, যেখানে ভক্তদের সঙ্গে নিজের কাজ ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।
ক্রিকেট শেখার বিষয়টি হয়তো তাসনুভা তিশার অভিনয়জীবনের মূলধারার বাইরের একটি অধ্যায়, তবে সেটি যেন তাকে নিজের শৈশবের অপূর্ণতা থেকে বের করে এনে নতুনভাবে আত্মপ্রকাশের সুযোগ দিচ্ছে। অভিনয়ের বাইরেও ব্যক্তি তিশা যে নিজের ইচ্ছাগুলো পূরণে সচেষ্ট, তা এই গল্পের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
তাসনুভা তিশার এই সৎ ও খোলামেলা বক্তব্য তার ভক্তদের কাছে আরও প্রাসঙ্গিক ও কাছের মানুষ করে তুলেছে। কাজের ব্যস্ততা, বলিউড প্রেম, শৈশবের স্মৃতি ও নিজের সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করার চেষ্টার মধ্য দিয়ে তিনি যেন একজন অভিনেত্রী হিসেবে নয়, একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবেই উঠে এসেছেন এই সাক্ষাৎকারে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ