ছবি: সংগৃহীত
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় সুইমিংপুলে অনুশীলনে নেমে মৃত্যুর ঘটনায় উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। রবিবার (২৬ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অব্যবস্থাপনা ও হত্যার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এই বিক্ষোভ চলে। এদিকে মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে, সায়মা সায়মা’, ‘আমার বোন মরল কেন, প্রশাসন জবাব দে’, ‘কে মেরেছে কে মেরেছে, প্রশাসন প্রশাসন’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
রাকসুর জিএস সালাহ্উদ্দিন আম্মার বলেন, ‘সায়মা দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। একজন শিক্ষার্থী সাতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে, তাহলে কেন তার ফিটনেস চেক করা হয়নি? রাকসুর প্রতিনিধিরা আজ থেকে দায়িত্বগ্রহণ করেছে, দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, সায়মা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত অনতিবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলের পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ দিতে হবে।
রাকসুর ভিপি ও শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা আন্দোলন করার পরও প্রশাসনের কোনো টনক লড়ে না। বারবার এমন হত্যা হোক, সেটা আমরা চাই না। সায়মা হত্যার বিচার নিশ্চিত করেই আমরা এখান থেকে যাব।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একপর্যায়ে রাত পৌনে ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব।
এ সময় তিনি মাইকে বলেন, ‘তোমরা যখন এখানে সমবেত হও, তখন আমরা ঘটনার সময় যারা উপস্থিত ছিলেন এবং মেডিকেলের কর্মকর্তাদের ভাষ্য জানার চেষ্টা করেছি। প্রশাসনের টপ ফরিদ স্যারসহ (সহ-উপাচার্য) প্রথমবারের মতো বিভাগের শিক্ষক-ছাত্র প্রতিনিধিদের তদন্তে রাখা হয়েছে। তারা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দেবেন। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নেব।’ উপাচার্যের বক্তব্যের পর শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে চলে যান।
এর আগে বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে নামলে পানিতে ডুবে যান সায়মা হোসাইন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সায়মা হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের এবং মন্নুজান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার বাড়ি কুষ্টিয়া জেলায়।
শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
এদিকে শিক্ষার্থী সায়মা হোসাইনের মৃত্যুর ঘটনা অনুসন্ধানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানকে আহ্বায়ক করে তিনজন শিক্ষক ও একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। জনসংযোগ দপ্তর থেকে রাত সাড়ে ১১টার পর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কমিটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুইমিংপুলে ঘটনার পূর্বাপর পরিস্থিতি ও পরবর্তীতে রাবি চিকিৎসা কেন্দ্রে সায়মা হোসাইনের চিকিৎসা কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনার দায়-দায়িত্ব নির্ধারণসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন এবং ১০ কার্যদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে হবে।
তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুইমিংপুল বন্ধ থাকবে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



