
ছবি প্রতীকী
রাজশাহী: রাজশাহীর মোহনপুর থানার অধীনে ইসলামপুর আশ্রয়ন প্রকল্পে এক ব্যক্তিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম নান্টু। গুরুতর অবস্থায় মোহনপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার চিকিৎসা চলছে।
স্থানীয়রা জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে পাঁচ ছয়জনের একটি দল আসে আশ্রয়ন প্রকল্পে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আশ্রয়ন প্রকল্পের ভেতর প্রবেশ করে নান্টুকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই বেদম প্রহার করা হয়। এরপর বগুড়া মালদিনগরের জনৈকা মনিরা আক্তারকে পাঠানো উকিল নোটিশ প্রত্যাহার করতে বলেন তারা। এসময় নান্টু রক্তঝরা টাকা জীবন থাকতে হাল ছাড়বেন না বলামাত্রই তাকে দুজনে লাঠি দিয়ে পেটায়। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ বিষয়টি নিশ্চিত করেননি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া প্রকাশ্যে কেউ বক্তব্য দিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অফিসিয়ালি কেউ যায়নি৷ আন অফিসিয়াল কেউ গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।
নান্টুর দাবি, তিনি মনিরাকে ব্যবসার উদ্দেশ্যে কয়েক ধাপে ১৭ লাখ টাকা দেন। বগুড়ায় তার আত্মীয়র মাধ্যমে মনিরার সাথে পরিচয় হয়। ব্যবসার উদ্দেশ্যে টাকা দেয়ার সমস্ত তথ্য প্রমাণ তার কাছে আছে বলেও তার ভাষ্য। তবে মোহনপুর থানার একজন পুলিশ পরিদর্শক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিষয়টি জটিল৷ মনিরাকে নান্টু টাকা দিলেও আমের ব্যবসার বিষয়টি সম্ভবত সত্য নয়। মূলত আমের আড়ালে এ দুজনের অন্য আর্থিক লেনদেন থাকতে পারে যা তদন্ত সাপেক্ষ। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে হামলায় আহত নান্টু মামলা করলে তারা অধিকতর তদন্ত করবেন। এছাড়া এখনো পর্যন্ত মনিরার পরিচয় এবং ঠিকানাও না থাকায় বিস্তারিত অগ্রগতি হয়নি। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নাম ভাঙিয়ে হামলা চালানোয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ওয়াকিবহাল বলে তিনি জানান।
এদিকে মোহনপুর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন নান্টুর সঙ্গে কথা বলার সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
তিনি বলেন, হামলার কয়েকদিন আগে থেকে মনিরা আক্তার একজন এসআইকে দিয়ে লিগ্যাল নোটিশ প্রত্যাহারের জন্য তাকে শাসিয়েছেন। এরপর প্রভাবশালীদের দিয়ে পিটিয়ে তার হাত পা ভেঙে দেন।
নান্টু বলেন, ‘বিশ্বাস করে আমার জীবনের সব সম্বল তাকে দিয়েছি। এখন আমি পথের ফকির হয়ে গেছি।’
তার দাবি, টাকা দেয়ার আগে চুক্তিপত্রও করেন মনিরার সঙ্গে। যাতে মনিরা এবং নান্টুর স্বাক্ষর রয়েছে। সুস্থ হওয়ার পর মনিরার বিরুদ্ধে ফৌজদারিসহ প্রমান দিয়ে একাধিক মামলা করবেন জানিয়ে বলেন, মনিরার সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের ভিডিও রয়েছে। নান্টু আরও জানান, ঘটনার রাতে তাকে পেটাতে পেটাতে 'টাকা পাওনা নেই' বলে জোর করে স্বাক্ষর নেয়া হয়। এদিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠায় র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন-৫ থেকেও এ বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।