
ছবি: সংগৃহীত
দক্ষিণ এশিয়ায় ফের চরম উত্তেজনা। বৃহস্পতিবার রাতভর পাকিস্তানের টানা মিসাইল ও ড্রোন হামলায় কেঁপে উঠেছে ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। সীমান্তবর্তী রাজ্য রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন শহরে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার পর ভারতের সেনাবাহিনী ও প্রশাসন পুরো সীমান্তজুড়ে সতর্কতা জারি করে, এবং ব্ল্যাকআউট ঘোষণা করা হয় যাতে সামরিক অবস্থান গোপন রাখা যায়। এই ঘটনায় দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তান সীমান্ত থেকে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছোঁড়া হয় ভারতের দিকে। NDTV জানায়, বিশেষ করে রাজস্থানের জয়সলমীর এবং তার আশপাশের সীমান্ত শহরগুলোতে পরপর ভয়ংকর বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। প্রতিটি বিস্ফোরণের পর এলাকাগুলোতে কাঁপুনি অনুভূত হয় এবং আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা জানান, প্রথমে একটি বিশাল বিস্ফোরণ হয়, তারপর খানিক নীরবতা—এরপর প্রায় এক ঘণ্টা ধরে একটানা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
পাকিস্তানের এই সামরিক আগ্রাসনের পরপরই ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী বিমান হামলার আশঙ্কায় ‘সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট’ কার্যকর করে সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে। বিশেষ করে পাঞ্জাবের পাঠানকোট শহর, যা পাক সীমান্ত থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, তা সম্পূর্ণ অন্ধকারে ডুবে যায়। একই অবস্থা দেখা যায় দিল্লির কাছাকাছি অবস্থিত চণ্ডীগড়েও। এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওতে দাবি করছেন, রাতের আকাশে পাকিস্তানি মিসাইলের চলাচল স্পষ্ট দেখা গেছে, আর ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পাল্টা আঘাতে সেগুলো আকাশেই বিস্ফোরিত হচ্ছে।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের বিমানবন্দর, সাম্বা, আরএস পুরা, ও আরিনা সংলগ্ন এলাকাকে লক্ষ্য করে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। হামলার উদ্দেশ্য ছিল ভারতের সামরিক শক্তিকে দুর্বল করা এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করা।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, পাকিস্তানের ছোড়া অন্তত আটটি ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছে। রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে এই মিসাইলগুলো আকাশেই ধ্বংস করা হয়। জম্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের এলাকা থেকে দুটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
জম্মু শহরে নিরাপত্তার স্বার্থে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক। পাঠানকোটের বিমানবাহিনীর ঘাঁটি এবং জম্মু বিমানবন্দরে সাইরেন বাজতে থাকে দীর্ঘ সময় ধরে। বারামুলা ও কুপওয়ারা এলাকাতেও সাইরেন শোনা গেছে। হোশিয়ারপুরের ডেপুটি কমিশনার আশিকা জৈন গণমাধ্যমকে জানান, ভারতীয় বিমানবাহিনীর নির্দেশে শহরে পূর্ণ ব্ল্যাকআউট কার্যকর করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজন আতঙ্কিত অবস্থায় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।
পাকিস্তানের হামলার জবাবে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে পাকিস্তানের একাধিক সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে লাহোরসহ কয়েকটি প্রধান শহরের আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি এবং কমিউনিকেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচার অন্তর্ভুক্ত। NDTV জানায়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায় এবং "সুনির্দিষ্ট প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা" গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, পাকিস্তান থেকে আসা সব হামলার তথ্য গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে আগে থেকেই আংশিকভাবে ধরা পড়েছিল। এতে করে এস-৪০০ সিস্টেমসহ অন্যান্য প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে আকাশপথেই বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে। তবে কিছু জায়গায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা, তা এখনও যাচাই করা হচ্ছে।
এই ঘটনার পর ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগ সেনাবাহিনীর সব সদস্যের ছুটি বাতিল করেছে এবং দেশের উত্তর ও পশ্চিম সীমান্তে পূর্ণ যুদ্ধ প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছে। প্রতিটি সামরিক ঘাঁটিকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর, রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং গুজরাটের সীমান্ত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে ভারী অস্ত্র ও রকেট লঞ্চার।
দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে একটি অনিয়ন্ত্রিত সংঘর্ষপূর্ণ যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মহল ও জাতিসংঘ বিষয়টিকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। এখনো পর্যন্ত দুই দেশের সরকারই সরাসরি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ ঘোষণা না করলেও সীমান্তে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সাম্প্রতিক ইতিহাসে এটি ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংকটগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আলোচনার বদলে গোলার শব্দই যেন এখন মুখ্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, দুই দেশের কূটনীতি এই আগুন নেভাতে পারে কিনা।
বাংলাবার্তা/এমএইচ