
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ থেকে এ বছর হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাওয়ার জন্য নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখনো ৪ হাজার ৩৬৫ জনের ভিসা সম্পন্ন হয়নি। অন্যদিকে ইতোমধ্যে মোট ৭৪টি হজ ফ্লাইটে করে ৩০ হাজার ১৩৪ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে হজ অফিসের প্রাপ্ত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভিসা প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাকি হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করে সৌদি আরবে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন হজযাত্রী রয়েছেন। ইতোমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার আওতায় ৫ হাজার ৬৪ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭৭ হাজার ৬৭৬ জন হজযাত্রী ভিসা পেয়েছেন, যার মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮২ হাজার ৭৩৫ জন। তবে এখনো অপেক্ষমাণ আছেন ৪ হাজার ৩৬৫ জন। তাদের ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করতে হজ অফিস এবং ধর্ম মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কাজ করছে।
হজ ফ্লাইটের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মোট ৭৪টি হজ ফ্লাইট সৌদি আরবে গেছে। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ৩৩টি, সৌদি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ২৫টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিচালিত ১৬টি ফ্লাইট রয়েছে। এসব ফ্লাইটের মাধ্যমে সৌদিতে পৌঁছেছেন ৩০ হাজার ১৩৪ জন হজযাত্রী।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৫ সালের হজ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৫ জুন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয়েছে গত ২৯ এপ্রিল এবং চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। হজ সম্পন্ন করার পর ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন থেকে, আর শেষ হবে ১০ জুলাইয়ের মধ্যে।
এদিকে, সৌদি আরবে গিয়ে এবার হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই বাংলাদেশি দুই হজযাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেলেও, অন্যজনের মৃত্যুর বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, সৌদিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হজ অফিস এই বিষয়গুলোতে সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে এবং প্রয়োজনে পরিবারের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
হজ ব্যবস্থাপনায় এবার বিভিন্ন পক্ষ থেকে সরকারকে আরও কার্যকর, আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর পরিকল্পনার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশেষ করে ই-হজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ও হজ অ্যাপের মাধ্যমে তথ্য প্রদান এবং যাত্রী পর্যবেক্ষণের পদ্ধতি আরও উন্নত করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, “আমরা হজযাত্রীদের সুষ্ঠু ভিসা প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি। যেসব হজযাত্রী এখনো ভিসা পাননি, তাদের ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করে নির্ধারিত ফ্লাইটে সৌদিতে পাঠানোর সব প্রস্তুতি রয়েছে।”
চলতি বছর হজযাত্রীদের মধ্যে সেবার মান, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা ও যাতায়াতব্যবস্থা নিয়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। হজ অফিস এবং মক্কা-মদিনায় নিয়োজিত হজ মিশনের কর্মকর্তারা নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ করে যাচ্ছেন এবং হজযাত্রীদের যেকোনো সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানে হেল্পলাইন চালু রয়েছে।
সবকিছু মিলিয়ে, এবার হজ ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন এবং হজযাত্রী পরিবহন নিশ্চিত করতে সরকার সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।