আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকারের

দেশের সর্বস্তরের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য গুরুতর অনুরোধ জানিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার (২২ জুন) রাতের দিকে সরকারের প্রেস উইংয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই বার্তা জানানো হয়।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রোববার রাজধানীর উত্তরা থানা পুলিশ সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদাকে একটি সুনির্দিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। তবে একই সময়ে কিছু দুষ্কৃতিকারীর সংঘবদ্ধ ‘মব’ গঠন করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটেছে, যা সরকারের গভীর উদ্বেগের বিষয়।

সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে, দেশের সকল নাগরিককে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার পেছনে যাবার থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ আইন-শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব এবং তা দেশের প্রযোজ্য আইনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। বিচারাধীন কোনো বিষয় বা ব্যক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র আদালতের রয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তির ওপর আক্রমণ, তাকে লাঞ্ছিত করা আইনত অপরাধ এবং এই ধরনের কর্মকাণ্ড আইনের শাসনের পরিপন্থি। সরকারের ভাষ্যে, ‘মব’ সৃষ্টি করে যে কোনো ধরনের উশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টিকারী সকলকে চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

সার্বিক পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সকল নাগরিককে সহনশীল ও ধৈর্যশীল থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবাইকে অবৈধ ও সহিংস কোনো কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, দেশজুড়ে আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষা করা ও সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকারের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি রয়েছে। আর এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া হলে তা অরাজকতা বৃদ্ধি করবে, যা দেশের অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।

অপরাধ ও দোষীদের শাস্তি আইনের নিয়ম অনুযায়ী হওয়া উচিত এবং এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত হবে, এটাই নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার। যেকোনো রকম বিচ্ছিন্নতা ও বিশৃঙ্খলা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, তাই তা থেকে সজাগ থাকার কথাও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে এবং সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।

সংক্ষেপে, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এই বিবৃতি দেশের জনগণকে শান্তি ও ন্যায়বিচারে বিশ্বাস রাখতে আহ্বান জানাচ্ছে, যাতে আমরা সকলে মিলেমিশে একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ ও উন্নত সমাজ গড়ে তুলতে পারি।