
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সোমবার (৫ মে) যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশে ফিরতে পারেন। খালেদা জিয়া বর্তমানে লন্ডনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং তাঁর সঙ্গে দুই পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমানও দেশে ফিরবেন। এই ফিরে আসার জন্য বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, তবে যদি এটি সম্ভব না হয়, তবে খালেদা জিয়া উড়োজাহাজের বিজনেস ক্লাসে দেশে ফিরে আসতে পারেন।
খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহযোগিতা চেয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তার একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তার জানিয়েছেন, রবিবার ও সোমবার নিয়ে তাঁদের পরিকল্পনার প্রস্তুতি চলছে এবং এখনো এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। তিনি আরও জানান, "এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য অপেক্ষা করছি, আশা করছি শিগগিরই এটি ব্যবস্থা হবে।"
খালেদা জিয়া গত ৭ জানুয়ারি কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে যুক্তরাজ্যে যান। লন্ডনে পৌঁছানোর পর তাঁকে একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে টানা ১৭ দিন চিকিৎসা নিয়ে তিনি হাসপাতাল থেকে বের হয়ে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় চলে যান। লন্ডনের ওই ক্লিনিকের লিভার বিশেষজ্ঞ জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
এতদিন পরে খালেদা জিয়া চিকিৎসার পর উন্নতি হওয়ায় দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে, লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে পূর্ণাঙ্গ ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি এবং তাঁকে দেশে ফিরে চিকিৎসার মধ্যেই থাকতে হবে। এক মেডিকেল বোর্ডের সদস্য জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো আছেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি গুরুতর ছিল এবং তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। চিকিৎসকরা লিভার প্রতিস্থাপন করতে ঝুঁকি এড়াতে পারেননি, তবে তাঁকে এখন চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে তাঁর দুই পুত্রবধূ—ডা. জুবাইদা রহমান ও শর্মিলা রহমান দেশে ফিরবেন। শর্মিলা রহমান দীর্ঘদিন ধরে দেশে আসা-যাওয়া করলেও, তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান অনেক দিন পর দেশে ফিরতে যাচ্ছেন। উল্লেখযোগ্য যে, তিনি এক এগারো সরকারের সময়ে তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে চলে যান।
এখন, রোজার ঈদের পর খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়, যা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলবে। চলমান চিকিৎসা পরিস্থিতি পর্যালোচনার মাধ্যমে তাঁকে পুরোপুরি সুস্থ করার জন্য চিকিৎসা নেওয়া হচ্ছে।
খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার আগ্রহ এবং স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ওপর সকলের নজর রয়েছে। তাঁর দেশে ফেরার সম্ভাবনা দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেছে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে তার পুনঃপূর্ন সুস্থতার খোঁজ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ