
ছবি: সংগৃহীত
দেশের চারটি অঞ্চলে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতির দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনার বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বুধবার (১৪ মে) ভোর ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময়ের জন্য অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর উদ্দেশ্যে দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও সিলেট—এই চার অঞ্চলের উপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও হতে পারে অস্থায়ী দৃষ্টিসীমা কমিয়ে দেওয়া মাঝারি থেকে ভারি বজ্রবৃষ্টি।
এই প্রাকৃতিক পরিস্থিতির কারণে উল্লিখিত চার অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এমন সংকেত সাধারণত মাঝারি ধরনের আবহাওয়া বৈরিতার ইঙ্গিত দেয়, যা নদীপথে চলাচলকারী নৌযানের জন্য বিশেষ সাবধানতার প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, এই ঝড়বৃষ্টির পেছনে মূলত স্থানীয়ভাবে সৃষ্ট বজ্রগর্ভ মেঘ এবং পশ্চিমা লঘুচাপের প্রভাব রয়েছে, যা এ সময়কালীন মৌসুমি পরিবেশের সঙ্গে মিলে সৃষ্টি করতে পারে তাৎক্ষণিক আবহাওয়া বৈরিতা। দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়ার প্রভাবে জনজীবনে কিছুটা দুর্ভোগ দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে খোলা জায়গায় চলাচল এবং ছোট নৌযানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর নৌবন্দর ও ঘাটগুলোতে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছে। পাশাপাশি নৌযান চালকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়েছে যাতে তারা অতিরিক্ত সতর্কতার সঙ্গে চলাচল করেন এবং আবহাওয়ার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকেন।
স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোকেও অনুরোধ করা হয়েছে, তারা যেন স্থানীয় জনসাধারণকে সতর্ক করে এবং নদীপথে চলাচলরত ব্যক্তিদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
দেশের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলো জানিয়েছে, এই ধরনের স্বল্পমেয়াদী ঝড়বৃষ্টি মে মাসের শেষ ভাগ পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে দেখা দিতে পারে। তবে এমন পরিস্থিতিতে যেহেতু অগ্রিম সতর্কতা দেওয়া হয়েছে, তাই জনসাধারণকে অহেতুক আতঙ্কিত না হয়ে পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে এবং অফিসিয়াল তথ্য অনুসরণ করে চলতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রবৃষ্টি দেশের কিছু অঞ্চলে উপকার বয়ে আনতে পারে। এতে খরার প্রভাব কিছুটা কমবে, তবে প্রবল বাতাস ও শিলাবৃষ্টির মতো পরিস্থিতি ফসলের ক্ষতি করতে পারে। তাই খোলা মাঠে রোপণকৃত ধান বা সবজির ক্ষেত রক্ষায় দ্রুত সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও সাময়িকভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, তবে সেগুলো অপেক্ষাকৃত কম তীব্রতার হবে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে, তবে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম।
সর্বশেষ হিসেবে, নদীপথে চলাচলরত সবাইকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেতের গুরুত্ব বুঝে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
বাংলাবার্তা/এমএইচ