ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা গত নভেম্বরে ‘শান্তির জন্য অসামান্য অবদান’ রাখার জন্য নতুন এক সম্মান ‘ফিফা শান্তি পুরস্কার’ চালুর ঘোষণা দেয়। কিন্তু পুরস্কার ঘোষণার শুরু থেকেই প্রশ্ন ছিল, তবে কি নোবেল শান্তি পুরস্কার ট্রাম্প না পাওয়ায় এমন ব্যবস্থা?
সেই প্রশ্নে এবার নতুন মাত্রা যোগ করল যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য সানডে টাইমস। তাদের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কার্যত নিজেই নিজেকে এই পুরস্কার দেওয়ার বন্দোবস্ত করেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার আগে হোয়াইট হাউস ফিফার কাছে একাধিক শর্ত জুড়ে দেয়।
সবচেয়ে আলোচিত দাবি ছিল—ফিফার প্রথম ‘পিস প্রাইজ’ ট্রফির আকার যেন বিশ্বকাপ ট্রফির সমান হয়।
বিশ্বকাপ ট্রফির উচ্চতা ১৪.৫ ইঞ্চি এবং এতে ব্যবহৃত হয় ১৮ ক্যারেট খাঁটি সোনা। শান্তি পুরস্কারের ট্রফির সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ না পেলেও ধারণা করা হচ্ছে, সেটি অন্তত এক ফুট উঁচু।
হোয়াইট হাউজের আরেকটি শর্ত ছিল—পুরস্কার গ্রহণের সময় ট্রাম্পের পাশে দুজন সেনা সদস্য উপস্থিত থাকবেন।
শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত না হলেও মঞ্চে দুজন মার্কিন নৌ সদস্য ট্রাম্পের হাতে ট্রফি তুলে দেন।
পুরো আয়োজনেই ছিল রাষ্ট্রীয় প্রটোকলের ছাপ। এমন আয়োজন ক্রীড়াঙ্গনের নিরপেক্ষতার সঙ্গে যায় কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
টাইমস আরো জানিয়েছে, পুরস্কার ঘোষণার আগে ট্রাম্প ও ফিফা এমন ভান করেন, যেন বিজয়ীর নাম আগেভাগে জানা ছিল না।
বাস্তবে ট্রাম্প নিজেই ফিফার সঙ্গে সমন্বয় করে নিজের নাম ‘শান্তির পুরস্কারপ্রাপ্ত’ হিসেবে নির্ধারণ করেন।
উল্লেখ্য, ৫ নভেম্বর নোবেল শান্তি পুরস্কার না পাওয়ার পরপরই ফিফা এই নতুন পুরস্কার চালুর ঘোষণা দেয়, যা সন্দেহ আরো ঘনীভূত করেছে।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে হোয়াইট হাউস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ট্রাম্প ও ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর ঘনিষ্ঠতা নতুন নয়। পুরস্কার বিতর্কের আগেও দুজনের বন্ধুত্ব প্রকাশ্যেই ছিল।
এবার অভিযোগ উঠেছে, ফিফার নীতি ভেঙেই এই সম্মান দেওয়া হয়েছে।
ফিফার নৈতিকতা পর্যবেক্ষক সংস্থা ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। অধিকারকর্মী সংগঠন ‘ফেয়ারস্কয়ার’ অভিযোগ করেছে, রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করে ইনফান্তিনো ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, দেশে-বিদেশে ট্রাম্পের রাজনৈতিক এজেন্ডাকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে ফিফার নিরপেক্ষতার নীতি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে, যা ফুটবল ও ফিফার সুনাম ও অখণ্ডতার জন্য গুরুতর হুমকি।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পকে ‘বিশ্ব শান্তিতে অবদান’-এর স্বীকৃতি হিসেবে একটি ট্রফি, একটি মেডেল ও একটি সনদ দেওয়া হয়। অথচ নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ীরা পান কেবল একটি মেডেল।
এখানেই শেষ নয়, ড্র অনুষ্ঠানে ইনফান্তিনো কেনেডি সেন্টার নামের ভেন্যুটিকে ‘ট্রাম্প-কেনেডি সেন্টার’ বলে উল্লেখ করেন। এর দুই সপ্তাহ পর ট্রাম্প-মনোনীত কেনেডি সেন্টারের পরিচালনা পর্ষদ আনুষ্ঠানিকভাবে নাম পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেয়! যদিও এই পরিবর্তনের জন্য কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



