ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সৃষ্ট উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আওয়ামীপন্থী ছয় ডিন পদত্যাগ করেছেন। তবে তাদের অপসারণের বিষয়ে আগামীকাল সকালে সিদ্ধান্ত জানাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘ডিনরা দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে উপাচার্য এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। আগামীকাল সকালে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
এ বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্ল্যাহ বলেন, ‘রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে ছয় ডিনের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আমরা সবাই পৃথকভাবে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করে আবেদনপত্র জমা দিয়েছি।
তবে উপাচার্য এখনো তার সিদ্ধান্ত জানাননি।’
এর আগে একইদিন দুপুরে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগের দাবিতে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, রেজিস্ট্রারসহ প্রশাসন ভবনের সব দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে দেন একদল শিক্ষার্থী। প্রশাসন ভবনের বিভিন্ন দপ্তরে তালা দেওয়ার ফলে কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পরে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে ডিনদের অপসারণের বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হলে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে দপ্তরগুলোর তালা খুলে দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে রাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) সালাহউদ্দিন আম্মার রাকসু ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় ছয় ডিনের কেউ ক্যাম্পাসে না থাকায় তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে একে একে তাদের ফোন করেন এবং তাদের উদ্দেশ্যে লেখা পদত্যাগপত্র প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার ক্লাস নিচ্ছেন জানতে পেরে তার বিভাগেও যান তিনি।
দুপুরে শিক্ষার্থীরা ডিনস কমপ্লেক্স ভবনে আইন, ব্যবসায় শিক্ষা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের তিন ডিনের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।
তালাবদ্ধ হওয়া ডিনরা হলেন আইন অনুষদের অধ্যাপক আবু নাসের মো. ওয়াহিদ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক এ এস এম কামরুজ্জামান এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক এস এম এক্রাম উল্ল্যাহ।
অন্য তিন আওয়ামীপন্থী ডিনরা হলেন— বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক নাসিমা আখতার, প্রকৌশল অনুষদের অধ্যাপক বিমল কুমার প্রামাণিক এবং ভূবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক এ এইচ এম সেলিম রেজা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের নির্ধারিত মেয়াদ গত ১৭ ডিসেম্বর শেষ হলেও প্রশাসনের সিদ্ধান্তে তাদের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এর প্রতিবাদেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।
বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রশাসন ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন ও অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইফতিখারুল ইসলাম মাসঊদ এবং জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বৈঠকে বক্তব্য দেন রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার, সিনেট সদস্য আকিল বিন তালেব, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মুজাহিদ ফয়সাল ও সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মো. গোলাম মোস্তফা এবং ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী অনিক হাসান আলভীসহ প্রমুখ।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



