ছবি: বাংলাবার্তা
আগে থেকেই সন্ত্রাসীদের হাতে রয়েছে অবৈধ অস্ত্র। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় লুট হওয়া অস্ত্র। এমনকি যারা লাইসেন্সের মাধ্যমে বৈধ অস্ত্র নিয়েছিলেন তাদেরও হাজারের বেশি অস্ত্র ইতোমধ্যে অবৈধ হয়ে গেছে। ফলে ‘অবৈধ’ ও ‘আইনি কারণে অবৈধ’ হওয়া অস্ত্রের পাশাপাশি সন্ত্রাসীদের কাছে থাকা বেআইনি অস্ত্র আইন-শৃঙ্খলা বাহিন ও প্রশাসনের ওপর বাড়তি চাপ প্রয়োগ করেছে।
সূত্র বলছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত দেশে ৫১ হাজার ৭৫৮টি অস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছে সরকার। এগুলোর মধ্যে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শােনের সাড়ে ১৫ বছরে ১০ হাজার ৮৪৫টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী আমলে দেওয়া লাইসেন্স স্থগিত করে, অস্ত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল সরকার।
জানা গেছে, রাজধানীসহ দেশের ৬৪ জেলার থানাগুলোতে ১৫ বছরে নেওয়া অস্ত্রের মধ্যে এক হাজার ৬৫৪টি অস্ত্র এখনো জমা পড়েনি। এই অস্ত্রগুলোই এখন অবৈধ হিসেবে গণ্য।
এখনো দগদগে ঘা ৩৬ জুলাইয়ের। অভ্যুত্থান ঠেকাতে পুলিশের ছোড়া গুলির ও অবৈধ অস্ত্রের পাশাপাশি ব্যবহার হয়েছে সরকারি লাইসেন্স করা অস্ত্রও। কোথায় সেই অস্ত্র, যা এখনো জমা পড়েনি, সরকারি নির্দেশনার পরও, খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। থানা থেকে লুট হওয়া সরকারি অস্ত্রগুলোর সব এখনো উদ্ধার হয়নি।
খোয়া যাওয়া অধিকাংশ অস্ত্র লুট হয়েছে থানা থেকে। রাজধানীর ভাটারা থেকে অনুসন্ধানের শুরু করতে গিয়ে জানা গেছে, সরকারি অস্ত্রের পাশাপাশি ব্যক্তিগত অস্ত্রও ছিল এই থানায়।
এরপর বাড্ডা থানায় গিয়ে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে অস্ত্রের হিসাব দেওয়া নিয়ে কিছুটা গড়িমসি করে থানা কর্তৃপক্ষ। অবশেষে পাওয়া গেল খোয়া যাওয়া অস্ত্রের হিসাব। এই থানা থেকে খোয়া যাওয়া একটি পিস্তল, একটি শটগান ও ৭৭টি সাউন্ড গ্রেনেড ও চারটি কালার স্মোক গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। রামপুরা থানা থেকে অস্ত্র খোয়া না গেলেও পুলিশের টহল টিম থেকে দুটি অস্ত্র ছিনতাই করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
পুলিশের হিসাব বলছে, এ পর্যন্ত চায়না রাইফেল এক হাজার ১০৬টি লুট করা হয়েছে। যার মধ্যে ৯৭২টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। রাইফেল ১২টি খোয়া গেছে; ১১টি উদ্ধার করা হয়েছে। এসএমজি ২৫১টি খোয়া গেছে; ২২০ উদ্ধার হয়েছে। এলএমজি ৩৪টি খোয়া গেছে, ৩০ উদ্ধার করা হয়েছে। চায়না পিস্তল ৫৩৯টি খোয়া গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. তৌহিদুল ইসলাম বলছেন, ‘নাগরিকদের মনে স্বস্তি তৈরি করতে অবৈধ অস্ত্রগুলো রাষ্ট্রের হাতে নিয়ে আসতে হবে। অবৈধ অস্ত্রধারীরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপরাধের পরিকল্পনা করতে পারে। তারা সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাবে।’
বাংলাবার্তা/এমআর
.png)
.png)
.png)



