
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানী ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও সিলেটসহ দেশের ছয়টি অঞ্চলের ওপর দিয়ে আজ মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর ১টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি বয়ে যেতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংশ্লিষ্ট এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত দেওয়া পূর্বাভাসে জানানো হয়, দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যেতে পারে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া। এর সঙ্গে থাকতে পারে বজ্রসহ বৃষ্টিপাতও। এর ফলে এসব অঞ্চলে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে এবং নৌযান ও ছোট নৌকা চলাচলে সাময়িক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সকাল ৯টা থেকে শুরু করে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, আজ মঙ্গলবার ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ স্থানে এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে উপকূলবর্তী ও পার্বত্য এলাকাগুলোর কিছু স্থানে মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিও হতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলমান মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা এবং বঙ্গোপসাগরের উপরবর্তী নিম্নচাপজনিত কারণে দেশে এমন আবহাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। মৌসুমি বায়ু বর্তমানে দেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে, যার প্রভাবে আগামী কয়েক দিন ধরেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা থাকবে।
বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ ও মাঝে মাঝে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি দেখা যাচ্ছে, যা দুপুরের দিকে আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে নাগরিক জীবন কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। অফিসগামী মানুষদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে, সেইসঙ্গে যানজটে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় গরম ও ভ্যাপসা অনুভূতি তীব্র থাকছে। তাপমাত্রার বড় ধরনের পরিবর্তন আপাতত না হলেও বৃষ্টির কারণে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, যারা নদীপথে ভ্রমণ করছেন, তারা যেন যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করেন এবং আবহাওয়ার আপডেট নিয়মিতভাবে অনুসরণ করেন। কারণ হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাত প্রাণহানির মতো বিপদ ডেকে আনতে পারে।
এদিকে, সারাদেশেই কৃষকদের জন্য এই বৃষ্টি কিছুটা আশার সংবাদ হতে পারে। খরার ধাক্কা সামলাতে এবং আমন ধানের বীজতলা তৈরি ও রোপণ কাজে এই বৃষ্টিপাত সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। তবে যদি ভারি বৃষ্টিপাত দীর্ঘস্থায়ী হয়, সেক্ষেত্রে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা এবং বন্যার আশঙ্কা থেকে যায়। তাই স্থানীয় প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নতুন কোনো নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। তবে এটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নেবে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সে অনুযায়ী সতর্কতা এবং পরবর্তী পূর্বাভাসে বিষয়টি জানানো হবে।
সব মিলিয়ে রাজধানীসহ ছয়টি অঞ্চলে ঝড়ের শঙ্কা ও দেশের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টির পূর্বাভাস একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা দিচ্ছে, যা নাগরিক জীবন, কৃষি এবং নদীপথে চলাচল—সব ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ মানুষকে আবহাওয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ