
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্পেনের নাগরিক মারিয়া মিম, যিনি মডেলিং এবং অভিনয়ের জগতে পরিচিত, সম্প্রতি তার পোশাক সম্পর্কিত মন্তব্য দিয়ে সবার নজর কাড়েন। সাবেক স্বামী অভিনেতা সিদ্দিকের সঙ্গে ২০১৯ সালে ডিভোর্সের পর থেকে মারিয়া মিম নিজেকে অনেক বেশি খোলামেলা ভাবে উপস্থাপন করে আসছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত আবেদনময়ী ছবি শেয়ার করা তার অন্যতম স্বাক্ষর, যা নানা সময় নিন্দিতও হয়েছে। তবে এসব সমালোচনার প্রতি কনুইও না বাঁকিয়ে, নিজের জীবনে স্বাধীনতা ও স্বাধীনভাবে চলতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন মারিয়া।
২০১২ সালে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা সিদ্দিককে বিয়ে করেন মারিয়া মিম। ২০১৩ সালে তাদের সংসারে আসে প্রথম সন্তান, আরশ হোসেন। তবে, ২০১৯ সালের শেষ দিকে তাদের সংসার ভেঙে যায় এবং ডিভোর্স হয়। ডিভোর্সের পর মারিয়া মিম তার জীবনযাপন পরিবর্তন করেন এবং খোলামেলা পোশাক পরিধান শুরু করেন, যা মিডিয়া এবং সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে নানান আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দেয়। বিশেষ করে তার অ্যাবর্ডেবল পোশাক এবং ক্লিভেজ-বর্ধিত ছবি নিয়ে নিন্দা করতে দেখা গেছে অনেককেই।
মারিয়া মিম একাধিকবার জানিয়েছিলেন যে, তিনি কীভাবে জীবন যাপন করবেন এবং কীভাবে পোশাক পরবেন তা পুরোপুরি তার ব্যক্তিগত ইচ্ছার ব্যাপার। সম্প্রতি সেলিব্রেটিদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট-এ অংশগ্রহণ করে মারিয়া গণমাধ্যমে বলেন যে, তিনি ওয়েস্টার্ন পোশাক পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এবং সেই কারণেই তার পোশাক নিয়ে সমাজের কিছু সমালোচনা মানে না।
মারিয়া মিম বলেন, “আমার পোশাক নিয়ে সমালোচনা শুনতে হয়, কিন্তু আমি তো দেশে ছোট পোশাক পরি না, বিদেশে পরি। কারণ আমি বেড়ে উঠেছি বার্সেলোনায়। সে কারণে ওয়েস্টার্ন পোশাক পছন্দ করি। এ ধরণের পোশাকে আমাকে ভালোও লাগে।”
এছাড়া তিনি বললেন, “বলিউডের কেউ ছোট পোশাক পরলে তখন প্রশংসা করা হয়, কিন্তু আমরা ছোট পোশাক পরলে সেটা ভালো লাগছে না। আমি মনে করি, মানুষের মেন্টালিটি পরিবর্তন করা উচিত। কারণ মিডিয়াতে কাজ করতে হলে তো গ্ল্যামারাস থাকতে হবে, সুন্দর ড্রেস পরতে হবে।”
এসময় মারিয়া মিম আরও জানান, “ছোট পোশাক তাদেরই পরা উচিত, যাদের তা মানায় এবং সুন্দর দেখায়। যারা ফিট নন, তারা যদি ছোট পোশাক পরেন বা ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরেন, সেটা দেখতে খারাপ লাগবে।”
মারিয়া মিমকে তার প্রাক্তন স্বামী সিদ্দিক সম্পর্কিত প্রশ্ন করা হলে, তিনি বলেন, “তার সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ হয়েছে ৬-৭ বছর আগে। সে তো আমার স্বামী নন, তাই এই বিষয়ে কিছুই বলতে চাই না।”
এখানে, তার প্রাক্তন স্বামীর বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য বা আলোচনায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত অনেকের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে কড়া দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেছেন এবং নিজের কাজে মনোনিবেশ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
মারিয়া মিমের পোশাক সংক্রান্ত মন্তব্য এবং জীবনযাপন নিয়ে বেশ কিছু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তবে তিনি সর্বদা নিজের স্বাধীনতার পক্ষে। তার বক্তব্য ছিল, “আমি যা পরি, সেটাই আমি উপভোগ করি এবং এর জন্য আমি অন্যদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি নত হওয়া পছন্দ করি না।”
প্রথমে মারিয়া মিমের খোলামেলা ছবি নিয়ে নিন্দা করা হলেও এখন অনেকেই তার আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা করছেন। বিশেষ করে তিনি যেভাবে মিডিয়া ও সোশ্যাল নেটওয়ার্কে নিজের ব্যাপারে মুক্তভাবে আলোচনা করেছেন, তা তার আধুনিক চিন্তা-ধারাকে তুলে ধরে। অনেকের মতে, মারিয়া মিম সমাজের লেবেল এবং গোঁড়ামির বিপরীতে দাঁড়িয়ে নিজের ইচ্ছার পথে চলে সমাজকে সচেতন করে তুলছেন।
মারিয়া মিমের এই মন্তব্যগুলি তাঁর জীবনের একটি নতুন দিক উন্মোচন করেছে, যেখানে তিনি নিজের সিদ্ধান্ত এবং পোশাক পছন্দের প্রতি একান্ত ভাবে সদ্ব্যবহার করতে চান। ভবিষ্যতে কি তিনি তার ফ্যাশন এবং জীবনধারার মধ্যে নতুন কিছু পরিবর্তন আনবেন, তা এখনো অজানা। তবে তিনি নিশ্চিত যে, “নিজের পছন্দে চলাটা এবং নিজের জীবনকে যথাযথভাবে উপভোগ করা আমার একান্ত অধিকার।”
বাংলাবার্তা/এমএইচ