ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খাঁন ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. বদরুল আরেফিন ভূঁইয়ার গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা (পশ্চিম) বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোরে বান্দরবান সদর থানার সিকদারপাড়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—কাজী মো. ইমন হোসেন (২৩) ও মো. সুজন (২৪)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, এক ব্যক্তির নির্দেশে কাস্টমস কর্মকর্তাদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এ হামলা চালান। সেই নির্দেশদাতা এখনো পলাতক।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার দুজন এবং পলাতক একজনসহ মোট তিনজন হামলার ঘটনায় জড়িত। কাস্টমস কর্মকর্তাদের ওপর হামলার জন্য তাদের ভাড়া করা হয়েছিল।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশীদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, গত ৪ ডিসেম্বর ডবলমুরিং থানায় অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলা হওয়ার পরই মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও হামলাকারীদের শনাক্তে কাজ শুরু করে। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে বান্দরবানের সিকদারপাড়া এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হামলার দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আরও জানা যায়, একজন ব্যক্তির নির্দেশে তারা এ হামলা চালায়। হামলার সময় সেই ব্যক্তির ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়। কর্মকর্তাকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছিল বলে গোয়েন্দা পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার তৃতীয় পলাতক আসামিকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ পশ্চিম জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান বলেন, গ্রেফতার দুজনের সঙ্গে কাস্টমস কর্মকর্তাদের পূর্বশত্রুতা ছিল না। তারা মোট তিনজন অন্য একজনের ভাড়ায় কাস্টমস কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করেছে। হামলাকারী একজন এবং পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
কাস্টমস কর্মকর্তাদের ধারণা, সম্প্রতি বিভিন্ন অনিয়ম, রাজস্ব জালিয়াতি ও নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি আটকে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে জড়িত চক্র হামলা চালাতে পারে। কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যমানের নিষিদ্ধ পপি বীজ ও ঘন চিনি, প্রায় ৩০ কোটি টাকার নিষিদ্ধ সিগারেট এবং মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা বিপুল পরিমাণ প্রসাধনী জব্দ করা হয়েছে। এসব অভিযানে দুজন কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন। প্রসাধনী জব্দের পর মো. আসাদুজ্জামানকে ফোনে হুমকিও দেওয়া হয়।
হামলার নির্দেশদাতার পরিচয় এখনো প্রকাশ করেনি পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে তারা। তবে হামলায় ওই ব্যক্তির ব্যক্তিগত মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. তারেক মাহমুদ বলেন, নিষিদ্ধ পপি বীজ, ঘন চিনি ও মিথ্যা ঘোষণায় আসা প্রসাধনী জব্দের কারণে একটি সিন্ডিকেট ক্ষুব্ধ। গত দুই মাসে এসব সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই বিভিন্ন নম্বর থেকে হুমকি আসছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



