ছবি: সংগৃহীত
দ্বিতীয় দফায় অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় একমাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিচ্ছে অন্তবর্তী সরকার। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে করদাতাদের সুবিধার্থে এই রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হতে পারে। এছাড়া অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা বাড়াতে এই সময় বাড়ানো হতে পারে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এক মাস সময় বাড়ানো হলে করদাতারা আগামী ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিলের সময় পাবেন। এর আগে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সময় একমাস বাড়ানো হয়েছিল, যা ৩১ ডিসেম্বর শেষ হচ্ছে। ২৩ নভেম্বর সময় বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আয়কর আইন অনুযায়ী ৩০ নভেম্বর আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় শেষ।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আয়কর আইন, ২০২৩ অনুযায়ী ২০২৫-২০২৬ করবর্ষের জন্য কোম্পানী ব্যতিত সকল শ্রেনীর করদাতার আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পেশার করদাতাদের পক্ষ হতে এনবিআরকে অনুরোধ করা হয়েছে। তাদের আবেদন বিবেচনায় নিয়ে আয়কর রিটার্ণ দাখিলের সময় এক মাস বাড়ানো হয়েছে।
অপরদিকে, সরকার চাইলে রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আবারও বাড়তে পারে বলে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। রিটার্ন জমার সময় বাড়বে কি না জানতে চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘না, সময় বাড়ানোর ব্যাপারটা এখনই বলা যাবে না, আমরা এটা বুঝে নেব। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত, যেহেতু প্রথমবারের মতো আমরা অনলাইনটাকে কম্পালসারি করেছি। বিশেষ করে অ্যাডভোকেটদেরও, যারা ট্যাক্স প্র্যাকটিশনার তাদেরও আমরা এই সুযোগ দিয়েছি; তাদের সব ক্লায়েন্টের রিটার্ন তারা অনলাইনে দিতে পারবেন। ফলে সবারই একটা প্রি-পারেশনের ব্যাপার আছে, চলছে। তো সেটা যদি সরকার মনে করে যে, না আমাদের আরেকটু বাড়ানোর প্রয়োজন হবে, হয়তো সরকার বিবেচনা করবে। আমি এখনই কিছু বলতে পারছি না। তবে এটা আমার মনে হয়, সময় বলে দেবে যে কী পরিমাণ রিটার্ন জমা পড়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার হিসাব বলছে প্রায় ৪২ লাখ ট্যাক্সপেয়ার অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন। জমা দিয়েছেন ২৬ লাখের বেশি। মানে আরো প্রায় ১৫-১৬ লাখ রিটার্ন জমা দেননি। তো এটা আগামী এক সপ্তাহে পাওয়াটা হয়তো ডিফিকাল্ট হবে। এখনো প্রতিদিন কিন্তু নতুন নতুন রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ১৫ হাজার প্লাস ট্যাক্সপেয়ার ই-রিটার্ন দেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করছেন।’ রিটার্ন জমার সময় বাড়ানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতি মিনিটে আমি দেখতে পাই। আমি এই গাড়িতে উঠেই দেখব আজ কয়জন রেজিস্ট্রেশন করলেন; কতজন রিটার্ন দিলেন, কত টাকা জমা হলো, সবকিছু কিন্তু আমার মোবাইল ফোন থেকে আমি সিস্টেম থেকে দেখতে পাই। ফলে আমরা বুঝব, যখন দেখব যে আর রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে না, কমে গেছে একদম, তখন বুঝব যে না এখন বোধ হয় শেষ পর্যায়ে চলে আসছে। যখন দেখব যে যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তার বড় একটা পার্সেন্টেজ রিটার্ন জমা দিয়ে ফেলেছেন, তখন আমরা বুঝব যে মোটামুটি পার্টটা শেষ হয়ে গেছে। তো এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে মনে হয় আরো বড় অংশ; আরো ১৫ লাখ প্লাস অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট করবে।’
‘সে ক্ষেত্রে আমাদের যদি প্রয়োজন হয়, পরে হয়তো সরকার বিবেচনা করবে, স্যারদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবো।’ যোগ করেন এনবিআর চেয়ারম্যান। চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছর এখন পর্যন্ত ২৬ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে তাদের ই-রিটার্ন জমা দিয়েছেন। গত আগস্টে সব করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করে এনবিআর। এক দফা সময় বাড়িয়ে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়িয়য়ে আগামী ৩১ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছে এনবিআর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে করদাতাদের আরো সুবিধা দিতে রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হতে পারে। আর অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করায় করদাতাদের প্রস্তুতিরও সময় দিতে হয়। সে জন্য সময় বাড়ানো হতে পারে। এনবিআর সব করদাতাদের সমান সুযোগ দিতে এই উদ্যোগ নিতে পারে। তবে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বাংলাবার্তা/এসজে
.png)
.png)
.png)



