ছবি: সংগৃহীত
সেপ্টেম্বর ১৯ থেকে ২১, ২০২৫ পর্যন্ত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের আয়োজন করা ‘পার্টনার রিট্রিট মালদ্বীপ-২০২৫’ ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন শহর থেকে তিনশ’ এর বেশি ট্রাভেল এজেন্টকে নিয়ে মালদ্বীপের ক্রসরোড আইল্যান্ডের সাই লেগুন ও হার্ড রকে তিনদিনব্যাপী এই মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্বে কোনও নির্দিষ্ট এয়ারলাইন্স এক দেশের তিনশ’ এর বেশি ট্রাভেল এজেন্টকে নিয়ে এমন আন্তর্জাতিক রিট্রিট আয়োজনের নজির আগে কখনো দেখা যায়নি।
ইতিহাসসৃষ্ট এই মিলনমেলায় অংশগ্রহণ করেছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, রাজশাহী, সৈয়দপুর, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ট্রাভেল এজেন্টরা। সেপ্টেম্বর ১৯ তারিখে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দু’টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট ব্যবহার করে মালদ্বীপের ভেলেনা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছে অতিথিরা। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরই অতিথিদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল স্বাগত অনুষ্ঠান, যেখানে এজেন্টরা নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় ও ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক বিস্তারের সুযোগ পেয়েছে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সাই লেগুন কনভেনশন হলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পারফরমেন্সের ভিত্তিতে ৪০ জন ট্রাভেল এজেন্টকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-মামুন, ট্রাভেল বিষয়ক পত্রিকা ‘দি বাংলাদেশ মনিটর’ এর সম্পাদক জনাব কাজী ওয়াহিদুল আলম, ইউএস-বাংলার হেড অব সেলস এন্ড মার্কেটিং জনাব শফিকুল ইসলাম, এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজার- জনসংযোগ মোঃ কামরুল ইসলাম।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-মামুন অনুষ্ঠানে অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, “এয়ারলাইন্সটি ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই যাত্রা শুরু করার পর থেকে দেশের ট্রাভেল পার্টনাররা যেভাবে আমাদের পাশে থেকেছেন, ভবিষ্যতেও তাদের সমর্থনে আমরা আন্তর্জাতিক এভিয়েশন জগতে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হব। বর্তমানে ইউএস-বাংলা দেশের অভ্যন্তরীণ রুট সহ এশিয়ার ১০টি দেশের ১৪টি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আমাদের বিমান বহরে মোট ২৪টি এয়ারক্রাফট রয়েছে, যার মধ্যে দুটি ৪৩৬ আসনের এয়ারবাস ৩৩০-৩০০। খুব শীঘ্রই আরও একটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ যুক্ত হবে। এছাড়া সৌদি আরবের জেদ্দা, রিয়াদ, মদিনা ও দাম্মাম রুটেও যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা আন্তর্জাতিক রুটের সুরক্ষা বৃদ্ধি এবং যাত্রীসেবা উন্নয়নের জন্য ২০টি নতুন এয়ারক্রাফট বহরে যোগ করার প্রায় চূড়ান্ত পরিকল্পনা নিয়েছি। এছাড়া দেশের মেধাবী পাইলট ও ইঞ্জিনিয়ার তৈরির জন্য প্রতি বছর ৩০ জন পাইলট ও ৩০ জন ইঞ্জিনিয়ার প্রশিক্ষণের প্রক্রিয়া চালু রাখা হয়েছে।”
পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, এই সম্মেলন কেবল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান নয়, বরং একটি অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি, ব্যবসায়িক নেটওয়ার্ক গঠন ও ট্রাভেল পার্টনারদের সঙ্গে স্থায়ী সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ হিসেবে কাজ করেছে।
পুরষ্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে হাজী এয়ার ট্রাভেলস লিমিটেড, দ্বিতীয় স্থান শেয়ার ট্রিপ লিমিটেড এবং তৃতীয় স্থান গোযায়ান লিমিটেড। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য ট্রাভেল এজেন্টরা জানান, ভবিষ্যতেও তারা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সঙ্গে অংশীদারিত্ব বজায় রাখবেন এবং বাংলাদেশের এভিয়েশন ও ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রিকে শক্তিশালী করতে অবদান রাখবেন।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে সামিট সমাপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয় এবং এই ধরনের আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করা হয়।
ইতিহাসে অনন্য এই রিট্রিট প্রমাণ করেছে যে, একটি এয়ারলাইন্স ও তার ট্রাভেল পার্টনারদের মধ্যে সুসংহত সম্পর্ক এবং সমন্বিত কার্যক্রম কিভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিফলিত হতে পারে। মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত তিনদিনব্যাপী এই সম্মেলন শুধু ব্যবসায়িক সাফল্যের নয়, বরং অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একটি উদ্দীপনা এবং নতুন সম্ভাবনার সঞ্চার করেছে।
বাংলাবার্তা/এসজে
.png)
.png)
.png)



