
ছবি: সংগৃহীত
আসন্ন শীতকালীন পর্যটন মৌসুমকে সামনে রেখে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) প্রাঙ্গণে গত বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী ‘১২তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার-২০২৫’ আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় শেষ হচ্ছে। পর্যটন বিচিত্রার আয়োজনে, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এনডোর্সে, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সার্বিক সহযোগিতায় আয়োজিত এ মেলায় দেশি-বিদেশি পর্যটন ব্যবসায়ীরা অংশ নিচ্ছেন।
ফেয়ারের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হবে জমকালো সমাপনী অনুষ্ঠান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান। বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ইয়াসমিন, ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত ও ঢাকায় নিযুক্ত মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত। আয়োজকদের প্রত্যাশা, এ আয়োজন পর্যটন খাতে নতুন দিক উন্মোচন করবে।
মেলার প্রথম দিন থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে আসা মানুষের ঢল নামে। বিকেল থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় আরও বাড়তে থাকে। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা জানাচ্ছেন, এখানে এসে একসঙ্গে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপ্যাকেজ সম্পর্কে জানতে পারা তাদের জন্য বিশেষ অভিজ্ঞতা।
মেলায় দুটি হলে ১৮০টি বুথে এয়ারলাইন্স, হোটেল, রিসোর্ট, ট্যুর অপারেটর ও ট্রাভেল এজেন্টরা অংশ নিয়েছে। এখানে রয়েছে দেশি-বিদেশি ভ্রমণের জন্য বিশেষ ছাড় ও নানা আকর্ষণীয় প্যাকেজ। পার্টনার কান্ট্রিগুলোর মধ্যে রয়েছে ফিলিপাইন, মালদ্বীপ ও নেপাল। টাইটেল স্পন্সর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এছাড়া হসপিটালিটি পার্টনার ক্রাউন প্লাজা ঢাকা গুলশান, ট্রান্সপোর্ট পার্টনার কনভয় সার্ভিস, আইসিটি পার্টনার এম৩৬০।
মেলার অংশ হিসেবে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ডেস্টিনেশন ও প্রোডাক্ট প্রেজেন্টেশন, বিটুবি সেশন, প্যানেল আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন ছিল। একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ ট্যুরিজম ইনভেস্টমেন্ট শোকেজ’। এখানে স্থানীয় বিনিয়োগের সুযোগ ও আসন্ন পর্যটন প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়েছে। এ আয়োজন শুধু ব্যবসায়িক নয়, সাধারণ দর্শনার্থীদের কাছেও সমানভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
আয়োজকরা জানাচ্ছেন, এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের উদ্দেশ্য হলো দেশি-বিদেশি পর্যটন খাতকে এক প্ল্যাটফর্মে আনা। মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে দেশের লাক্সারি হোটেল, রিসোর্ট ও ট্যুরিজম সার্ভিস। যা বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা তুলে ধরছে।
মেলায় প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। তবে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করলে প্রবেশ ফি সম্পূর্ণ ফ্রি। প্রবেশ কুপনের বিপরীতে থাকছে র্যাফেল ড্র-এর সুযোগ, যেখানে বিজয়ীরা পাচ্ছেন এয়ারলাইন্স টিকিট ও আকর্ষণীয় ভ্রমণ ভাউচার।
পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক ও এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল বলেন, “বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পের বিকাশে এমন আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আমাদের পর্যটন গন্তব্যগুলো তুলে ধরতে এই ফেয়ার বিশেষ ভূমিকা রাখছে। প্রতিবছরের মতো এবারও আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। সরকারও এ মেলাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।”
মেলার মাধ্যমে দেশের ভ্রমণপিপাসু মানুষ যেমন নানা সুযোগ পাচ্ছে, তেমনি পর্যটন খাতেও আসছে নতুন গতি। সাশ্রয়ী মূল্যে দেশি-বিদেশি ভ্রমণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ফলে আসন্ন মৌসুমে দেশের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ভ্রমণকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে বলে আশা করছে আয়োজকরা।
সব মিলিয়ে, ১২তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার শুধু একটি বাণিজ্যিক প্রদর্শনী নয়, বরং বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুনভাবে পরিচিত করার একটি সফল পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ