ছবি: সংগৃহীত
চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিংয়ের সঙ্গে ‘অসাধারণ’ বৈঠকের পর চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, বর্তমানে ৫৭ শতাংশ শুল্ক হার কমিয়ে ৪৭ শতাংশে নামানো হবে।
তবে এর সঙ্গে শর্তও জুড়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। চীনকে আবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন কেনা শুরু করতে হবে, বিরল খনিজ রপ্তানি অব্যাহত রাখতে হবে এবং অবৈধ ফেন্টানিল বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান শহরে অনুষ্ঠিত দুই নেতার বৈঠক প্রায় দুই ঘণ্টা স্থায়ী হয়। ২০১৯ সালের পর এটাই ছিল ট্রাম্প ও সি জিনপিংয়ের প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ। এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনের ফাঁকে এই বৈঠক হয়, যা ছিল ট্রাম্পের ঝোড়ো এশিয়া সফরের শেষ প্রান্তের অংশ। সফরে তিনি দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সঙ্গেও বাণিজ্য অগ্রগতির বিষয় আলোচনা করেন।
বুসান ছাড়ার পর প্রেসিডেনশিয়াল উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ান-এ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, এটা ছিল এক অসাধারণ বৈঠক।’
তিনি আরও জানান, চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ৫৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪৭ শতাংশে নামানো হবে।
ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই বৈশ্বিক শেয়ারবাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। প্রধান এশীয় সূচক ও ইউরোপীয় ফিউচার মার্কেট লাভ-ক্ষতির মধ্যে দোদুল্যমান হয়ে পড়ে। চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক ১০ বছরের উচ্চতা থেকে কিছুটা নেমে আসে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন ফিউচার দুর্বল হয়ে পড়ে।
বৈঠকের আগে থেকেই ওয়াল স্ট্রিট থেকে টোকিও পর্যন্ত বাজারগুলো উর্ধ্বমুখী ছিল-কারণ, বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের অবসানের আশায় বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী ছিলেন। এই বাণিজ্যযুদ্ধ বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনকে নড়িয়ে দিয়েছে এবং ব্যবসায়িক আস্থায় বড় ধাক্কা দিয়েছে।
বৈঠক শেষে ট্রাম্প সি জিনপিংয়ের সঙ্গে করমর্দন করে তাঁকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দেন। পরে বিমানবন্দরে চীনা প্রেসিডেন্টকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
এর আগে, গত রবিবার যুক্তরাষ্ট্রের আলোচকেরা জানিয়েছিলেন, চীনের সঙ্গে একটি কাঠামোগত সমঝোতায় পৌঁছানো গেছে। এই চুক্তি কার্যকর হলে চীনা পণ্যে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এড়ানো যাবে এবং চীনের বিরল খনিজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা স্থগিত থাকবে- যেখানে চীনই বিশ্বের প্রধান সরবরাহকারী দেশ।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় দুই দেশই এখন আরও কড়া অবস্থান নিতে প্রস্তুত। তাই এই নতুন বাণিজ্য যুদ্ধবিরতি কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



