ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম বন্দরে পূর্ণ কনটেইনার লোড (এফসিএল) কনটেইনারের ওপর আরোপিত বর্ধিত স্টোর-ভাড়া আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। একই সিদ্ধান্তের আওতায় ঢাকার কমলাপুর আইসিডিতে রাখা এফসিএল কনটেইনারের বাড়তি ভাড়াও আপাতত আদায় করা হবে না। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, রমজানে ভোক্তাদের সুবিধা বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বন্দর ব্যবহারকারীরা বর্ধিত মাশুল সাময়িক স্থগিতের পরিবর্তে সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম বন্দরে পুরো কনটেইনার লোড বা এফসিএল কনটেইনারের ওপর আরোপিত বর্ধিত স্টোর-ভাড়া ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ঢাকার কমলাপুরে আইসিডিতে থাকা এফসিএল কনটেইনারের বাড়তি ভাড়াও স্থগিত করা হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রমজানে ভোক্তাদের সুবিধা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বর্ধিত মাশুল সম্পূর্ণ বাতিলের দাবি বন্দর ব্যবহারকারীদের।
চলতি বছরের মার্চে চট্টগ্রাম বন্দর ও ঢাকার কমলাপুর আইসিডিতে রাখা এফসিএল কনটেইনারের গুদামভাড়া চারগুণ বাড়ানো হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নির্ধারিত চার দিনের মধ্যে ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনার ডেলিভারি না নিলে প্রথম সাত দিনের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ২৪ ডলার। এরপর পরবর্তী ১৩ দিনে প্রতিদিন ৯৬ ডলার এবং তার পর থেকে প্রতিদিন ১৯২ ডলার করে আদায় করার কথা বলা হয়। কনটেইনার জট কমানোর লক্ষ্যেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। তবে শুরু থেকেই ব্যবহারকারীরা বাড়তি ভাড়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ আগস্ট থেকে দুই দফায় মোট দুই মাসের জন্য এই বাড়তি ভাড়া স্থগিত করা হয়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কর্তৃপক্ষ আবারও বর্ধিত ভাড়া আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘নতুন ট্যারিফ চালু হয়েছে, এই জন্য আমরা বাড়তি ট্যারিফ স্থগিত করেছি, যাতে ভোক্তাদের ওপর কোনো প্রভাব না পড়ে এবং আমদানি-রপ্তানিকারকরা যাতে কোনো ধরনের ঝামেলা না হয়।’ এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটির মাধ্যমে আমরা দেখতে চাই যে, যারা ভোক্তা বা ইউজার তারা যেন সঠিক সময়ে মালগুলো ডেলিভারি নিয়ে যায়।’ বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক মন্দা পরিস্থিতি, বন্দরে অন্যান্য মাশুল বৃদ্ধি, মার্কিন শুল্ক চাপের এই সময়ে দেশের বন্দরে বাড়তি খরচ কোনোভাবেই কাম্য নয়, বলছেন ব্যবসায়ীরা। এতে রপ্তানি খাতেও বড় ধরনের চাপ তৈরি হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, ‘আমদানিকারকেরা দশ টাকা দশ টাকা বাঁচিয়ে প্রোফিট করার চেষ্টা করছে। পরবর্তী আরেকটা এলসি দেওয়া চেষ্টা করছে, ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করার চেষ্টা করছে। এই সময়ে স্টোর রেন্ট বাড়িয়ে হয়তো বন্দরের অনেক আয় হবে কিন্তু যদি ব্যবসায়ীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায় তাহলে কার জন্য এই বন্দর হবে!’
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কহার ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে নামানো হলেও সেটি এখনো তুলনামূলকভাবে বেশি, তবে সহনীয় পর্যায়ে আনা গেছে। তাঁর মতে, এই সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু একই সময়ে বন্দরে এসে নতুন করে বাড়তি ট্যারিফ আরোপ করা হলে তা পরস্পরবিরোধী হয়ে দাঁড়ায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এতে নীতিগত অসংগতিই তৈরি হচ্ছে না কি না। এদিকে চলতি সপ্তাহে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন ইয়ার্ডে ৫৯ হাজার একক ধারণক্ষমতার বিপরীতে প্রায় ৩৫ হাজার কনটেইনার মজুত ছিল বলে জানা গেছে।
বাংলাবার্তা/এসজে
.png)
.png)
.png)



