ছবি: সংগৃহীত
গত তিন সপ্তাহ ধরে বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। নতুন করে আলুর দামও বেড়েছে; কেজিতে আলু এখন পাঁচ টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে। শীতের সবজি বাজারে আসতে শুরু করলেও বিভিন্ন শাকসবজি এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানান, চলতি বছর দীর্ঘদিন ধরে কম দামে আলু বিক্রি হয়েছে। দাম কম থাকায় অনেক কৃষক লোকসানের মুখে পড়েছেন। এক সপ্তাহ আগেও খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ২০-২৫ টাকা। তবে গতকাল এক কেজি আলু বিক্রি হয়েছে ২৫-৩০ টাকায়। অর্থাৎ কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। যদিও গত বছরের তুলনায় বাজারে আলুর দাম এখনো অনেক কম। এর কারণ, আগের বছর আলু বিক্রি করে ভালো লাভ করায় কৃষকেরা গত মৌসুমে বেশি পরিমাণে আলু চাষ করেছিলেন। তবে উৎপাদন বেশি হওয়ায় আলুর দাম পড়ে যায়। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুসারে, গত বছর এমন সময়ে বাজারে এক কেজি আলুর দাম ছিল ৬৫-৭৫ টাকা।
এ দিকে কেজিতে ৫ টাকা দাম বাড়লেও আলু বিক্রি করে লাভ হচ্ছে না বলে জানান খুচরা বিক্রেতারা। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মিম স্টোরের বিক্রেতা মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘এখন পাইকারি থেকে ২৩ টাকা দরে আলু কিনেছি। এক বস্তায় ৬০ কেজি আলু থাকে। এর মধ্যে ৪-৫ কেজি পচা পাওয়া যায়। আর ৮-১০ কেজি থাকে গুঁড়া (ছোট) আলু। ফলে এখন ৩০ টাকা দরে আলু বিক্রি করেও লাভ করা কষ্টকর হয়ে যায়।’ রান্নাঘরের আরেক দরকারি পণ্য পেঁয়াজের দামও চড়া। বর্তমানে বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিন সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩০ টাকা কম ছিল।
বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে দেশি পেঁয়াজের মজুত প্রায় শেষের দিকে। মাসখানেক পর বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করবে। এ সময় সাধারণত পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তি থাকে। যদিও বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করলে দাম কিছুটা স্থিতিশীল থাকে। তবে বর্তমানে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নেই। তাই পেঁয়াজের দামে বাড়তি প্রবণতা রয়েছে।ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি, ডিম প্রভৃতির দাম গত সপ্তাহের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকা ও এক ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়েনি; তবে সরবরাহ কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
বাজারে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলাসহ শীতের বিভিন্ন সবজি আসতে শুরু করেছে। সাধারণত শীতের সবজি আসা শুরু করলে সার্বিকভাবে সবজির দাম কমে আসে। কিন্তু বাজারে এখনো শাকসবজির দাম তুলনামূলক বেশি বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। গতকাল বাজারে প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা, লাউ ৬০-৮০ টাকা এবং প্রতি কেজি শিম ১০০-১৪০ টাকা, টমেটো ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম গত সপ্তাহের মতো স্থিতিশীল রয়েছে।
রাজধানীর মালিবাগের বাসিন্দা তারেক হাসান বলেন, ‘গতকাল দুই মুঠো পালংশাক কিনেছি ৮০ টাকায়। আর ফুলকপি ও বাঁধাকপি কিনতে লেগেছে ১২০ টাকা। শীত এলে সবজির দাম কমে। কিন্তু এখনো দু-তিন পদের সবজি কিনতে ২০০ টাকা লাগছে। দাম তো কমেনি।’
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



