ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার প্রথম মেট্রো লাইন উত্তরা–মতিঝিলের জন্য জাপান থেকে ২০ সেট ট্রেন আমদানি করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। বর্তমানে সংস্থাটি আরও দুইটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ করছে এবং পরিকল্পনাধীন রয়েছে আরও তিনটি লাইন। প্রথম লাইনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত ট্রেন বিদেশ থেকে আনা হলেও পরবর্তী লাইনগুলোর জন্য যন্ত্রাংশ আমদানি করে দেশেই ট্রেন সংযোজনের উদ্যোগ নিয়েছে ডিএমটিসিএল।
এই লক্ষ্যে দেশে একটি সংযোজন কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফারুক আহমেদ। গতকাল উত্তরা মেট্রোরেল কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমি সাউথ কোরিয়ার কয়েকটি কারখানা ঘুরে দেখেছি। ভবিষ্যতের মেট্রো লাইনের জন্য ট্রেনগুলো বাংলাদেশেই সংযোজন করার বিষয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে এবং কোরিয়ার পক্ষ থেকে প্রাথমিক সম্মতিও মিলেছে। আগামী ডিসেম্বরেই কোরিয়ার একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসবে।
পরে বিষয়টি নিয়ে আরো জানতে যোগাযোগ করা হলে মেট্রোরেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশই মেট্রো নির্মাণের পর ট্রেন সংযোজন কারখানা তৈরি করেছে। বাংলাদেশেও এটা সম্ভব। আমরা পরিকল্পনা করছি, আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে (মেট্রোরেলের ট্রেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান) বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় জমি দেব। বাকি কাজ তারাই করে নেবে।’
সংবাদ সম্মেলনে রোববার মেট্রোরেলের ছাদে এক কিশোর উঠে পড়ার ঘটনাটিও তুলে ধরেন ডিএমটিসিএল-এর এমডি। তিনি জানান, রবিবার রাতে ট্রেনের ছাদে একজন শিশুকে পাওয়া যায়। ট্রেন সচিবালয় স্টেশনে পৌঁছালে কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে ছাদে দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি অবহিত করেন। বৈদ্যুতিক লাইনে সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। ঘটনাটি ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্ম দিতে পারত উল্লেখ করে ফারুক আহমেদ যাত্রীদের আরও সচেতন থাকার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, ওই কিশোর কীভাবে এবং কোথা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠে পড়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বিয়ারিং প্যাড দুর্ঘটনা নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির মেয়াদ আরো বাড়ানোর তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধানে নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিয়ারিংটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিদেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আসার অপেক্ষায় তদন্ত কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ ডিসেম্বর করা হয়েছে।’ সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের বিষয়ে ফারুক আহমেদ বলেন, ‘ভূমিকম্পের পরে মেট্রো লাইনের পুরোটাই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। কোথাও কোনো কাঠামোগত ত্রুটি হয়নি। তবে মেট্রোর দেয়াল কেন ফেটেছে সেটা আমি বলতে পারব না।’
উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে টঙ্গী মেট্রো সম্প্রসারণের বিষয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘এটার কোনো অগ্রগতি নেই। পরবর্তী সরকার না এলে এটার অর্থায়ন পাওয়া যাবে না।’ মেট্রোর এমডি জানান, ডিএমটিসিএলের আওতাধীন যেসব জমি রয়েছে সেগুলো অস্থায়ীভাবে ইজারা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত আয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ বিষয়ে আগামী মাস থেকেই দরপত্র আহ্বান করা হবে। মেট্রোর পাঁচ লাইনের জন্য পাঁচটি ডিপোর পরিকল্পনা থাকলেও আমরা তা তিনটিতে সীমিত করার কথা ভাবছি এবং বাকি দুটি ডিপো অন্য কাজে ব্যবহার করে আয় বাড়ানো সম্ভব। ডিএমটিসিএলের এমডি জানান, সম্প্রতি বিয়ারিং প্যাড দুর্ঘটনা, ভূমিকম্প ও ককটেল পাওয়ার ঘটনায় মেট্রোরেলে যাত্রী চলাচলের হার প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে। আগে দৈনিক গড়ে ৪ লাখ ৬০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করলেও এখন তা কমে প্রায় ৪ লাখের কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



