ছবি: সংগৃহীত
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে শিশুদের ঝুঁকি উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। এক গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশে অনলাইনে থাকা ২৩ শতাংশ শিশু মারাত্মক ঝুঁকির মুখে রয়েছে, যার মধ্যে ফেসবুককে সবচেয়ে অনিরাপদ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিশু এবং শিশুদের অনলাইন যৌন শোষণ প্রতিরোধ’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত কর্মশালায় তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবিব।
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, অন্তর্ভুক্তিমূলক সুরক্ষার অভাবে বাড়ছে শিশুদের অনলাইন যৌন শোষণসহ নানান ঝুঁকি। অনলাইনে ৮ শতাংশ শিশু আংশিক ঝুঁকিতে এবং ৬৯ শতাংশ শিশু আংশিক নিরাপদ অবস্থায় আছে। এ ক্ষেত্রে ফেসবুক ব্যবহারে সর্বোচ্চ ৭৭ শতাংশ শিশু ঝুঁকিতে আছে। এ ছাড়া ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারে ১৫ শতাংশ ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারেও শিশুরা নিরাপদ নয়।
কর্মশালাটির সভাপতিত্ব করেন টিডিএইচ-এনএলের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর নূরুল কবির। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান, ডিএমপির উপকমিশনার (নারী সহায়তা ও তদন্ত) ফারহানা ইয়াসমিন, প্রতিবন্ধী বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ও গবেষক শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, ব্লাইন্ড এডুকেশন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের নির্বাহী পরিচালক মো. সাইদুল হক এবং অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মহুয়া পালসহ আরও অনেকে।
অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবিব বলেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম অনেক সুযোগ ও সম্ভাবনা এনে দিয়েছে। যে কারণে শহর থেকে গ্রামে ডিজিটাল সিস্টেম ব্যবহার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। একই সঙ্গে অনলাইনে যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের ঝুঁকিও বাড়ছে, যা শিশুদের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় শিশুদের নিরাপদ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও সহজলভ্য বিচারব্যবস্থায় বিনিয়োগ জরুরি।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইদুর রহমান খান বলেন, শিশুরা এখনো বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ইন্টারনেটের দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান ফাঁদে পড়ছে তারা। শিশুর সুস্থ বিকাশের স্বার্থে এগুলো বন্ধ করতে হবে। শিশুদের নিরাপদ ও সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য কমিউনিটির অন্তর্ভুক্তি জরুরি। এ বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে টিডিএইচ-এনএলের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর নূরুল কবির বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রতিবন্ধী শিশুরা এখনো সবচেয়ে অবহেলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর একটি। যেখানে বৈশ্বিকভাবে প্রায় ১৬ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধী, সেখানে বাংলাদেশের সরকারি হিসাব মাত্র ২ দশমিক ৮ শতাংশ—যা দীর্ঘদিনের অবমূল্যায়ন, সামাজিক কলঙ্ক এবং অদৃশ্য থেকে যাওয়ার বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে গড়ে ওঠা মনোভাব অনেক সময় শিক্ষা, চলাচল ও সামাজিক জীবনে সমান অংশগ্রহণের পথ রুদ্ধ করে দেয়। আর শিশুদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও জটিল ও কঠিন হয়ে ওঠে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



