ছবি: সংগৃহীত
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর ঘটনাবলি প্রমাণ করে যে, ২০০৯ সালে ক্ষমতা দখলের পর শেখ হাসিনা দলটিকে যে নৃশংস, সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিবাদী সংগঠনে রূপান্তরিত করেছিলেন, তারা ঠিক তেমনই রয়ে গেছে।
রবিবার সকালে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ডে এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি পোস্টে লিখেছেন, এটা এখন স্পষ্ট, ওসমান হাদির কণ্ঠকে চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার হীন উদ্দেশ্যেই আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। তাদের লক্ষ্য অত্যন্ত স্পষ্ট: স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে উৎখাতকারী কোটি কোটি তরুণ বাংলাদেশির মনে ভীতি সঞ্চার করা। এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। ঠিক ৫৪ বছর আগে এই একই সপ্তাহে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের স্থানীয় দোসররা আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের—বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। সেসময়ও তাদের উদ্দেশ্য ছিল একই: একটি উদীয়মান জাতির কণ্ঠরোধ করা এবং জনগণের মনে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা।
তিনি বলেন, ওসমান হাদি হয়তো আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মতো কোনো প্রথাগত তাত্ত্বিক বুদ্ধিজীবী নন, কিন্তু তার শক্তিও কোনো অংশে কম নয়—তিনি কোটি মানুষের কণ্ঠস্বর। তিনি সেই নতুন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন, যা আর বিদেশি প্রভুদের চাপিয়ে দেওয়া কোনো ‘পুতুল রানি’র শাসনাধীন নয়। তিনি এমন এক ঐতিহাসিক সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক, যা স্বাধীনতার এক নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে। তিনি এক বিপ্লবী নতুন বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।
প্রেস সচিব আরও লিখেন, একসময় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী ইতিহাসের সঠিক পথেই ছিলেন। তাজউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে দলটির বহু নেতা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০২৪ সালে—এবং জুলাই বিপ্লবের পূর্ববর্তী দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে—আওয়ামী লীগ ইতিহাসের সম্পূর্ণ ভুল পথে অবস্থান নিয়েছে। দলটির নেতাকর্মীরা নব্য রাজাকার ও আল-বদরে পরিণত হয়েছে। একটি পুরো প্রজন্মকে স্তব্ধ করতে তারা হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। যদিও অদম্য ‘জেন-জি’ প্রজন্মের কাছে তারা পরাজিত হয়েছে, তবুও সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোর ঘটনাবলি প্রমাণ করে যে, ২০০৯ সালে ক্ষমতা দখলের পর শেখ হাসিনা দলটিকে যে নৃশংস, সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিবাদী সংগঠনে রূপান্তরিত করেছিলেন, তারা ঠিক তেমনই রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারিয়েছিল, কিন্তু এই জাতি স্তব্ধ হয়ে যায়নি। ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে যখন শেখ মুজিব একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন, তখনও এ জাতি দমে যায়নি। এমনকি গত জুলাই-আগস্টে যখন শেখ হাসিনার নির্দেশে আমাদের মেধাবী তরুণদের নির্বিচারে হত্যা করা হলো, তখনও এই জাতিকে থামিয়ে রাখা যায়নি। এবং ২০২৫ সালের ডিসেম্বরেও এই জাতিকে স্তব্ধ করা যাবে না—তা ‘বাংলার কসাই’ খ্যাত হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামাল যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন। তারা হয়তো সাময়িকভাবে হাদির কণ্ঠ রোধ করেছে, কিন্তু সারা দেশে এমন কোটি কোটি হাদি ছড়িয়ে আছে। তারাই গড়বে এক নতুন বাংলাদেশ—যেখানে আওয়ামী লীগ নামের এই ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী শক্তির কোনো ঠাঁই হবে না।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



