ছবি: সংগৃহীত
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল অঞ্চলে সব যাত্রীবাহী ট্রেনের ভাড়া ২০ ডিসেম্বর থেকে বৃদ্ধি পাবে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, পুরোনো ১১টি সেতু ও কালভার্টে পন্টেজ চার্জ আরোপের কারণে সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা থেকে শুরু হয়ে সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা পর্যন্ত হবে। পূর্বাঞ্চল রেলের বাণিজ্যিক বিভাগ এই নতুন ভাড়া কার্যকরের অনুমোদন দিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ভাড়া না বৃদ্ধির পাশাপাশি অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বৃদ্ধি ও নতুন সেতু নির্মাণের কারণে আয় বাড়াতে পুরোনো সেতুগুলোকে ‘অতিরিক্ত দূরত্ব’ হিসেবে ধরা হয়েছে। আগে প্রতি কিলোমিটার সেতুকে ১৭ কিলোমিটার হিসাব করা হতো, এখন তা ২৫ কিলোমিটার হিসেবে গণনা করে ভাড়া নির্ধারণ করা হবে। এর ফলে বিভিন্ন রুটের দূরত্ব বেড়ে যাওয়ায় ভাড়াও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঢাকা–চট্টগ্রাম রুটে একমুখী দূরত্ব ৩৪৬ কিলোমিটার থেকে বেড়ে ৩৮১ কিলোমিটার হবে। এর ফলে মেইল ট্রেনে ভাড়া বাড়ছে ১৫ টাকা, কমিউটার ট্রেনে ২০ টাকা, শোভন চেয়ারে ৪৫ টাকা, প্রথম সিটে ৬৪ টাকা, স্নিগ্ধায় ৮০ টাকা এবং এসি বার্থে ১৪৩ টাকা। বিরতিহীন ট্রেনগুলোতে এই বৃদ্ধি সর্বোচ্চ ১৫৯ টাকা পর্যন্ত হবে। ঢাকা–কক্সবাজার রুটে দূরত্ব ৫৩৫ কিলোমিটার থেকে বেড়ে ৫৮৬ কিলোমিটার হবে। এ রুটে মেইল ট্রেনে ভাড়া বাড়ছে ২০ টাকা, কমিউটার ট্রেনে ২৫ টাকা, শোভন চেয়ারে ৬০ টাকা, প্রথম সিটে ৯২ টাকা, স্নিগ্ধায় ১১৫ টাকা এবং এসি বার্থে ২০৭ টাকা। বিরতিহীন ট্রেনে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি ২২৬ টাকা পর্যন্ত হবে। ঢাকা–সিলেট ও চট্টগ্রাম–সিলেট রুটেও ভাড়া বাড়ছে ১০ থেকে ১২৭ টাকা পর্যন্ত। একইভাবে চট্টগ্রাম–জামালপুর রুটে বৃদ্ধি ১০ থেকে ৬৯ টাকা এবং ঢাকা–দেওয়ানগঞ্জ রুটে ৫ থেকে ১৭ টাকা পর্যন্ত হবে।
রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগ জানায়, রেল বর্তমানে লোকসানে যাত্রী পরিবহন করছে। ভাড়া দীর্ঘদিন না বাড়ায় আয়ের ঘাটতি পুষিয়ে নিতে রেয়াত প্রত্যাহার, অতিরিক্ত কোচে বাড়তি ভাড়া, টিকিটে সার্ভিস চার্জ ও কয়েকটি ক্লাসে ভ্যাট যুক্ত করার পর এবার পন্টেজ চার্জ আরোপ করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের নতুন ভাড়া কাঠামো ইতোমধ্যে টিকিটিং অপারেটর সহজকে পাঠানো হয়েছে। ফলে ১০ ডিসেম্বর থেকেই অগ্রিম টিকিটে বাড়তি ভাড়া দিচ্ছেন যাত্রীরা।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, রেলের ভাড়া সর্বশেষ ২০১৬ সালে বাড়ানো হয়েছিল। সেতু নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে বাড়তি বিনিয়োগের কারণে আইন অনুযায়ী পন্টেজ চার্জ আরোপ করা হয়েছে। সাধারণ যাত্রীদের ওপর চাপ কমাতে ভাড়া ন্যূনতম পর্যায়ে বাড়ানো হয়েছে। পূর্বাঞ্চলে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও রেল কর্তৃপক্ষ বলছে-পরিচালনা ব্যয় মেটাতে এবং সেবা অব্যাহত রাখতে ‘বিকল্প আয়ের সূত্র’ তৈরি ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো পথ ছিল না।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



