উন্নয়নের বাংলাদেশ। বাংলা বার্তা
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল ছিল বাংলাদেশের জন্য একটি কলঙ্কময় অধ্যায়। এই সময়ে বাংলাদেশকে বলা হতো এক প্রকার তলাবিহীন ঝুড়ি। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে এক প্রকার তখন মাথা নত করে চলতে হতো। বিভিন্ন দেশকে করতো হতো সমীহ। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসলে দিন বদলের হাওয়া লাগে বাংলাদেশে। একের পর এক উন্নয়নে বদলে যেতে থাকে সোনার বাংলাদেশের চিত্র। এই দেশ এখন স্বয়ংসম্পর্ণ এমনকি বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে নিজের অবস্থানের কথা জানান দিয়েছে। ফলে বিএনপির রেখে যাওয়া তলাবিহীন ঝুড়ি এখন উন্নয়নের বাংলাদেশে রূপ নিয়েছে। যে দেশ এখন বিশ্বের কাছে রোল মডেল। আর এই রোল মডেলের নেতৃত্বে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাফল্য-নেতৃত্বে অবিচল শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের বৃহত্তম ও সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। যুদ্ধ বিধ্বস্ত শূণ্য কোটার দেশ থেকে বাংলাদেশ সর্বপ্রথম আলোকময় পথের দিশা খুঁজে পায় মুক্তিযুদ্ধ প্রণেতা এবং আওয়ামী লীগ দলের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে। বর্তমানে টানা ১৪ বছর ধরে চলছে শেখ হাসিনার নেত্রীতে আওয়ামী সরকারের রাজত্ব। আর এই ১৪ বছরে বাংলাদেশ শূন্য থেকে স্বর্ণ যুগে পদার্পণ করেছে। ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন >> জীবনমান উন্নয়নে আ.লীগের নজরকাড়া অবদান
শেখ হাসিনার সাহসী পথ চলার বদৌলতে বাংলাদেশ একটি দূর্বল অর্থনৈতিক দেশ থেকে সব অঙ্গীকার পূরণ করে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পদার্পন করেছে। আর তা করতে গিয়ে মানুষের জীবনমানকে উন্নত করতে হয়েছে, আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হয়েছে। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে বর্তমানে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সাবমেরিন ক্যাবল (২০২০ সালে শুরু হয়েছে, শেষ হবে ২০২৪ সালে) থেকে শুরু করে ফ্লাইওভার, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্থাপন, যমুনা নদীর বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে শুরু করে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রমাণ করে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের এই ১৪ বছরে উন্নয়নের চিত্র কতটা অর্থপূর্ণ ছিল।
শূণ্য থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশের বর্তমান রূপ-
২০০৬ সালে যখন বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় ছিল তখন ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পূনর্বাসনের খাত ছিল শূন্য, ২০২৩ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জনে যুক্ত হয়েছে প্রায় ৪২ লক্ষ ৮০ হাজার ১১৫ জন (৮ লক্ষ ৪১ হাজার ৬২৩ টি পরিবার), উল্লেখ্য- ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে আশ্রয়ণের প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে ২ শতক ভূমির মালিকানাসহ গৃহ প্রদান করা হয়েছে। বিএনপির আমলে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলার পরিমাণ ছিল শূন্য, বর্তমানে মোট ২১ টি জেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত নিশ্চিত হয়েছে। ২০০৬ সালে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত উপজেলা ছিল শূন্য, ২০২৩ আওয়ামী লীগ ৩৩৪ টি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত করণে নিশ্চিত করেছে। ২০০৬ সালে ডিজিটাল সেন্টারের সংখ্যা ছিল একদম শূণ্য, বর্তমান বাংলাদেশ পেয়েছে ৮ হাজার ৯৭২ টি ডিজিটাল সেন্টার। বর্তমানে ইউনিয়ন পর্যায়ে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগ পেয়েছে ২৬০০ টি ইউনিয়ন, যা ২০০৬ সালে ছিল কল্পনার বাইরে। দেশে বর্তমানে উৎপাদিত মোবাইল ফোন ব্র্যান্ডের সংখ্যা ১৫ টি, বিএনপি আমলে একটা সিঙ্গেল মোবাইল ফোনই ছিল হাতের নাগালের বাইরে। হাইকেট পার্ক ও সফটয়্যার টেকনোলোজি পার্কের সংখ্যা বাংলাদেশে বর্তমানে ৯২ টি, ২০০৬ সালে এর সংখ্যা ছিল শূন্যের ঘরে। অর্থনৈতিক অঞ্চলের সংখ্যা ২০২৩ আওয়ামী লীগের ঝুলিতে রয়েছে ৯৭ টি (মোট ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে), সেক্ষেত্রে ২০০৬ সালে বিএনপির ঝুলি ছিল শূন্য। ‘ফ্যামিলি কার্ড’ ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা প্রাপ্ত উপকারভোগী (টিসিবি কতৃক প্রদত্ত) ২০০৬ সালে ছিল শূন্য, ২০২৩ সালে সাফল্যের সাথে প্রায় কোটি মানুষের (৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) খাদ্য সহায়তা প্রাপ্ত উপকারভোগী। মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৮৪ লক্ষ (৮.৪ মিলিয়ন) জন, ২০০৬ সালে ছিল শূন্য। জেলেদের প্রদানকৃত নিবন্ধন ও পরিচয়পত্রের সংখ্যা ২০০৬ সালে শূন্য, বর্তমানে তার পরিমাণ ৩১ লক্ষ ৮৪ হাজার জেলে (৩.১৮৪ মিলিয়ন)। ২০২৩ সালে কৃষকদের প্রদানকৃত কৃষি কার্ড পেয়েছে ২ কোটি ৬২ লক্ষ কৃষক (২৬.২ মিলিয়ন), ২০০৬ সালে যার সংখ্যা ছিল জিরো। খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ২০২৩ সালে ৫১ লক্ষ জন (৫.১ মিলিয়ন), ২০০৬ সালে ছিল জিরো। বিএনপির আমলে বর্গাচাষিদের জন্য কৃষিঋণ কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ছিল শূন্য, আওয়ামী লীগ দিয়েছে ২৮ লক্ষ (২.৮ মিলিয়ন) বর্গাচাষিদের জন্য কৃষিঋণ। বর্তমানে সার্বজনীন পেনশন স্কিমের সুবিধাভোগী রয়েছে ৮.৫ কোটি জন (৮৫ মিলিয়ন), ২০০৬ সালে ছিল শূন্য।
আরও পড়ুন >> যোগাযোগ ব্যবস্থায় আ.লীগের মাইলফলক অর্জন
শেখ হাসিনা প্রবল অন্ধকারে আলোর দ্যূতি; যিনি আইনের শাসন বিহীন বাংলাদেশে আইনের শাসন ফিরিয়ে এনেছেন। গত ১৪ বছরে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করেছেন। বাংলাদেশ এখন উদীয়মান অর্থনীতির দেশ। মাত্র ১৪ বছরে বাঙালির বিশ্বস্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে টেকসই, বাস্তবসম্মত, অর্থনৈতিকভাবে ইতিবাচক ও মানবিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। একসঙ্গে যুগপৎভাবে অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন খুব কম দেশেই সাধিত হয়েছে। এই যুগপৎ কল্যাণমুখী উন্নয়ন শেখ হাসিনার জীবনের এক অনন্য অর্জন। জাতীয় মুক্তি, উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা, বাংলাদেশের সব অর্জন সাধিত হয়েছে আওয়ামী লীগের হাত ধরে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দরবারে মর্যাদাবান রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
আরও পড়ুন >>
শেখ হাসিনা হাত ধরে নতুন দিগন্তে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা |
বিশ্ব রাজনীতি এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ |
৪র্থ শিল্প বিপ্লবের হাত ধরে অগ্রযাত্রার পথে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ |
বাংলাবার্তা/এআর