বিএনপি। ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইস উদ্দিনকে বিএসএফ কর্তৃক নির্মমভাবে গুলি করে হত্যাকাণ্ডের জাতিসংঘের তদন্তের দাবি করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই দাবি জানানো হয়।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ তথ্য জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘গত রোববার (২১ জানুয়ারি) ভোরে যশোর সীমান্তের ধান্যখোলা বিওপির জেলেপাড়া পোস্ট-সংলগ্ন এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইসুদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করে। ভারত বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
‘নিহত ব্যক্তি বিজিবির সদস্য তা আমরা বুঝতেই পারেনি। তিনি লুঙ্গী ও টি-শার্ট পরে ছিলেন এবং পাচারকারী দলের সঙ্গে তাকে ভারতের সীমানার ভেতরে দেখা গিয়েছিল’— বিএসএফের এমন বক্তব্য প্রত্যাখান করে রিজভী বলেন, ‘একজন বিজিবি সদস্য কীভাবে লুঙ্গী আর টি-শার্ট পরে পাচারকারী দলের সঙ্গে মিশে থাকতে পারেন, সেটি বোধগম্য নয়। এই বয়ান শুধু বানোয়াটই নয়, ভারতীয় নীতি নির্ধারকদের ‘বিগ ব্রাদার’ সুলভ গরীমা থেকে উৎসাহিত হয়ে বিএসএফ তাদের হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাইছে।’
তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদ রইসুদ্দিনকে হত্যা করার পর তাদের মনগড়া বয়ানকে বাংলাদেশের মানুষ ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। এই মর্মস্পর্শী হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশ জুড়েই ক্ষোভ ও বিক্ষোভে আলোড়িত। জ্বলে উঠেছে বাংলাদেশ। ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষী নীতির কারণেই সীমান্তে রক্তপাত থামছে না। বিএসএফ বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাকে ব্লাড-স্পোর্ট বা রক্তক্ষয়ী খেলায় পরিণত করেছে।’
রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষকে নতজানু রাখার এটি একটি আধিপত্যবাদী বার্তা। এতদিন বিএসএফের হাতে সাধারণ বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। আর এখন সীমান্তে বিজিবিরও নিরাপত্তা নেই। এক দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে আরেকটা স্বাধীন দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী হত্যা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। বরং এটির সঙ্গে রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘দিল্লীর সঙ্গে অধীনতামূলক চিরস্থায়ী রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ফল হচ্ছে বিএসএফ কতৃর্ক সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার ঘটনায় নিশ্চুপ থাকা। মোহাম্মদ রইসুদ্দিনকে হত্যার ঘটনা পরের দিন পর্যন্ত জানতেই পারেননি ক্ষমতাবিলাসী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নাগরিকদের জীবনের চেয়ে দখলদার আওয়ামী মন্ত্রীদের ক্ষমতা খুব জরুরি। দেশবাসীকে পরাধীন রেখে ক্ষমতা ভোগ করাই আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শ। স্বভূমির সীমানায় কাউকে শান্তিতে রাখেনি আওয়ামী সরকার। এখন তাদের বন্ধুপ্রতীম দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে দিয়ে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক এবং সীমান্তরক্ষীদের প্রাণ সংহার করা হচ্ছে।’
বাংলাবার্তা/এআর