অভিযুক্ত তাসকিফ আল তৌহিদ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে এক শিক্ষার্থীকে মারধর এবং হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের নেতার বিরুদ্ধে। নবাব আব্দুল লতিফ হলে এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের কাছে একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগী মফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি নবাব আব্দুল লতিফ হলের ১০৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র। অন্যদিকে অভিযুক্ত তাসকিফ আল তৌহিদ আরবি বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং হলের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। এছাড়া তিনি রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
অভিযোগপত্রে মফিজুর রহমান জানান, সোমবার বিকেলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগ নেতা তৌফিকের সঙ্গে দেখা হয়। আমি কোথায় যাচ্ছি জিজ্ঞেস করেন এবং রিপোর্ট হাতে নেন। আমার বাবা কি করেন জানতে চাইলে বাবা রিক্সা চালায় জানার পর তিনি বলেন, বাবা রিক্সা চালায় অথচ তুই এত টাকা দিয়ে ডাক্তার দেখাস কী করে? একটি সামাজিক সংগঠন থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে চিকিৎসা করানোর কথা জানালে তৌহিদ তাকে দশজনকে রান্না করে খাওয়ানোর কথা বলেন।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরও জানান, তৌহিদের কথার প্রতিবাদ জানালে তিনি বলেন, ‘অমুক (কারো নাম উল্লেখ না করে) নাকি তিন হাজার টাকা পায়।’ আমি উত্তরে জানাই, আমার কাছে কেউ টাকা পায় না। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে তৌহিদসহ তার কয়েকজন অনুসারী মিলে আমাকে গেস্ট রুমে নিয়ে যায় এবং পিঠে একটি আঘাত করে গালিগালাজ করে ও হল থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নিকট অভিযোগপত্র দিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা তাসফিক আল তৌহিদ বলেন, আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ওই শিক্ষার্থী অভিযোগপত্র দিয়েছেন। আমার সঙ্গে তার কোনো ধরনের ঝামেলা হয়নি। হলের ছোট ভাইদের সাথে তার সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে হল প্রাধ্যক্ষ বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ‘মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ওই ছেলের সাথে শিবিরের সম্পৃক্ততার তথ্য থাকায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়ে নবাব আব্দুল লতিফ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে উভয়কেই ডেকে মিমাংসা করে দিয়েছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর আর কোনো সমস্যা যেন না হয় হল প্রশাসন সেটা খেয়াল রাখবে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছেন।
বাংলাবার্তা/এমপি