ছবি: সংগৃহীত
শ্রীলঙ্কার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা রবিবার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ডিটওয়ার কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে ৩৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। এখনো বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
এটি গত দুই দশকের মধ্যে দ্বীপদেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মধ্যাঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ এখনো ধীরে ধীরে সামনে আসছে, কারণ ত্রাণকর্মীরা উপড়ে পড়া গাছ ও ভূমিধসে অবরুদ্ধ হয়ে থাকা সড়ক পরিষ্কার করছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র (ডিএমসি) জানায়, রবিবারের শুরুতে যেখানে নিহতের সংখ্যা ছিল ২১২, সেখান থেকে তা বেড়ে ৩৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রায় ৪০০ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে এবং রেকর্ড বৃষ্টিতে সারা দ্বীপজুড়ে ১৩ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি ২০০৪ সালের বিধ্বংসী এশীয় সুনামির পর সবচেয়ে ভয়াবহ, ওই সুনামিতে প্রায় ৩১ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল এবং ১০ লাখেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছিল।
শ্রীলঙ্কাজুড়ে রবিবার বৃষ্টি কমে এলেও রাজধানীর নিচু এলাকাগুলো এখনো পানির নিচে ছিল।
কর্তৃপক্ষ এক বড় ধরনের ত্রাণ অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
কলম্বোর ঠিক উত্তরে একটি হাসপাতালে রবিবার সন্ধ্যায় আটকে পড়া রোগীদের জন্য খাদ্য বহনকারী একটি বেল ২১২ হেলিকপ্টার নদীতে বিধ্বস্ত হয়। বিমান বাহিনীর এক মুখপাত্র এএফপিকে জানান, হেলিকপ্টারের পাঁচজন আরোহীই উদ্ধার হয়েছেন এবং তাদের কাছের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ভারত থেকে পাঠানো আরেকটি হেলিকপ্টার ২৪ জনকে উদ্ধার করেছে।
উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং হুইলচেয়ারে থাকা এক ব্যক্তি। তারা কলম্বো থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে মধ্যাঞ্চলীয় কোটমালে শহরে আটকে পড়েছিলেন।
শ্রীলঙ্কার বিমান বাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তানও উদ্ধারকারী দল পাঠাচ্ছে। পাশাপাশি জাপান শ্রীলঙ্কার তাৎক্ষণিক প্রয়োজন নিরূপণে একটি দল পাঠাবে এবং সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিমান বাহিনী আরো জানায়, শনিবার পানিতে তলিয়ে যাওয়া উত্তরের চিলাউ শহরের একটি হাসপাতাল থেকে দুইটি নবজাতক ও ১০ বছর বয়সী এক শিশুকেও উদ্ধার করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলেছে, রাজধানীতে বন্যার পানির স্তর কমতে অন্তত আরো একদিন সময় লাগবে। একই সঙ্গে শুষ্ক আবহাওয়ার পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় দিত্বাহ শনিবার ভারতের দিকে উত্তরমুখী হয়ে সরে গেছে।
বাংলাবার্তা/এমএইচ
.png)
.png)
.png)



